স্টাফ রিপোর্টার

কলকাতায় ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের একটি গেস্ট হাউসে অগ্নিকান্ডে এক বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন আগুনে আরো এক বাংলাদেশী এক ভারতীয় আহত হয়েছেন আহতদের কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে

শনিবার (১২মার্চ) ভোররাতে কলকাতায় ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের গেস্ট হাউসে আগুন লাগে। বিধ্বংসী অগ্নিকান্ডের ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশী নাগরিক শামিমাতুল আরস(৬০) মারা যান। তার পাসপোর্ট নম্বর BR-0361098. বাংলাদেশের চাপাই নবাবগঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। বাংলাদেশর কলকাতাস্থ উপহাইকমিশনের কাউন্সিলর মো: বশির উদ্দিন সংবাদকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন

জানা গেছে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় আসেন ওই বাংলাদেশী নারী। ফ্রি স্কুল স্ট্রিট সংলগ্ন মির্জা গালিব স্ট্রিটের ৫এ নম্বর গেস্ট হাউসে ওঠেন তিনি। শনিবার ভোরে আগুন লাগার পর পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গেস্ট হাউসে থাকা বাসিন্দারা আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন। সময় ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ওই বাংলাদেশী বৃদ্ধার। তিনি মেডিক্যাল ভিসায় কলকাতায় চিকিৎসার জন্য আসেন

আগুন লাগার খবর পেয়ে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন পৌছায় ঘটনাস্থলে। আগুন নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করেন দমকল কর্মীরা। কিন্তু আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়। কালো ধোঁয়াতে ঢেকে যায় চারপাশ। প্রায় এক ঘন্টার লাগাতার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রনে আনা হয় আগুন। কিন্তু গেস্ট হাউসের ১১টি কক্ষ সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায় গেস্ট হাউসটি সিল করে দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ

একজন বাংলাদেশীর মৃত্যুর খবরের পাশাপাশি আহত আরও দুই বাংলাদেশীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন। অগ্নিকান্ডের ঘটনা কেন্দ্র করে শহরে ব্যাপক উদ্বেগউৎকন্ঠা সৃষ্টি হয়েছেখবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশবাহিনী। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল রূপেশ কুমারও

দমকল সূত্রে খবর, আনুমানিক ভোর ৪টায় গেস্ট হাউজে আগুন লাগে। প্রাথমিক ভাবে দমকলের তিনটি গাড়ি আগুন নেভানোর কাজ করলেও পরে আরো কয়েকটি গাড়ি ঘটনাস্থলে আনা হয়

আগুন লাগার সময় গেস্ট হাউসে সবাই গভীর ঘুমে বিভোর ছিলেন। তারা আগুনের উত্তাপ এবং বাইরের লোকজনের চিৎকার চেচামেচিতে সজাগ হয়ে সন্মুখে আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পান। আতঙ্কে তারা গেস্ট হাউজের ভেতরে ছোটাছুটি করতে থাকে। মেইন গেইট বন্ধ থাকার কারণে তারা ভিতরে আটকে পড়েন। পুলিশ দমকল কর্মীরা গেট ভেঙ্গে তাদের উদ্ধার করেন

তবে আগুন লাগার কারণ এখনও জানা সম্ভব হয়নি। দমকল বাহিনীর প্রাথমিক, সম্ভবত শর্ট সার্কিট থেকেই এই আগুন লাগতে পারে। দমকল বাহিনী পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। ওই গেস্ট হাউসে আগুন নেভানোর সরঞ্জাম ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে বলে তারা জানিয়েছেআহত বাংলাদেশী হলেন মেহতাব আলম (৪২) অন্যজন পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবদের মাঈনুল হক (৩৫)

খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের কলকাতাস্থ ডেপুটি হাইকমিশনের কাউন্সিলর মো: বশির উদ্দিন ঘটনাস্থলে যান এবং মৃত বৃদ্ধার স্বজনদের সান্তনা দেন। তাঁর মরদেহ দ্রুত দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানান মো: বশির। পরে তিনি হাসপাতালে গিয়ে আহত বাংলাদেশী নাগরিকের খোঁজ নেন এবং তার চিকিৎসার ব্যাপারে ডাক্তারদের সাথে আলোচনা করেন