ভিওসি নিউজ ডেক্স
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে “জিরো টলারেন্স” নীতি অনুসরণে তাঁর সরকারের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, দেশবাসীর শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়াই তাঁদের লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, নারী নির্যাতন ,মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি। কারণ দেশের মানুষের শান্তি, নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সন্ধ্যায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন ও মহান বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ শীর্ষক দুইদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধনী পর্বে সভাপতির ভাষণে একথা বলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয় যৌথভাবে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ সম্মানিত অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন।
জাতির পিতার ছোট মেয়ে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলার মুক্তির সংগ্রামে সার্বিক সহায়তার জন্য ভারতের অবদানের কথা পুণরায় স্মরণ করে শেখ হাসিনা সুবর্ণ জয়ন্তীর এই উদযাপনে অংশগ্রহণের জন্য ভারতের রাষ্ট্রপতির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ সম্মানিত অতিথি হিসেবে এই গৌরবগাঁথার দিনে আমাদের মধ্যে উপস্থিত হয়েছেন। আমি তাঁর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
ভারতীয় রাষ্ট্রপতি অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে স্বাগত জানান।
শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় কমিটি ও জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী স্বাগত বক্তৃতা করেন।
করোনার কারণে এর আগে না পারলেও আজকে বিজয়ের উৎসব ব্যাপকভাবে দেশব্যাপী ব্যাপকভাবে উদযাপিত হওয়ায় তিনি দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এবার আমরা নতুন উদ্যমে আমাদের বিজয়ের উৎসব করেছি এবং এই উৎসব শুধুমাত্র উৎসব নয়, এ উৎসব আমাদেও আগামী দিসের চলার পথের প্রতিজ্ঞা- বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে ইনশাল্লাহ আমরা গড়ে তুলবো।
জাতির পিতার রেখে যাওয়া স্বল্পোন্নত দেশ থেকে আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করাই তাঁর লক্ষ্য এবং আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূতি হলো। এই সময়ে আমরা কতটুকু এগোতে পেরেছি সেটাই বড় কথা।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার দারিদ্রের হার ৪০ ভাগ থেকে ২০ ভাগে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে, মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৫শ ৫৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি দেশের প্রতিটি গৃহহীনকে ঘর করে দেয়ার কর্মসূচী সরকার অব্যাহত রেখেছে।
জাতির পিতার যে স্বপ্ন- দু:খী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর- তা তাঁর সরকার পূরণ করতে পারবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস তাঁর সরকারের এগিয়ে যাওয়ার পথে অনকেটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলেও এই কোভিড-১৯কে নিয়ন্ত্রণ করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে তাঁর সরকার সচল রাখতে সক্ষম হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ জাতির পিতার পররাষ্ট্র নীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়,’ অনুসরণ করেই সকল দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন ,জাতির পিতার সেই পররাষ্ট্র নীতি মেনেই সকল দেমের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রেখে আমরা আমাদেও উন্নয়নের চাকাকে সচল রেখেছি।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষ সমানভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারে এবং তারা সেটা পালন করছে, সেটা আমরা নিশ্চিত করেছি।
শেখ হানিা বলেন,২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ গড়ার যে লক্ষ্য ছিল, তাঁর সরকার উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভের মধ্যদিয়ে সেটা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এখন লক্ষ্য ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা। সূত্র : বিএসএস