নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

জঙ্গি অনুপ্রবেশ রুখতে পস্চিমবঙ্গ-পাঞ্জাব ও আসামে সিমান্ত রক্ষী বাহনী (বিএসএফ)-র কার্যক্ষেত্র বাড়িয়ে কর্মকর্তাদের গ্রেফতার, তল্লাশী ও বাজেয়াপ্ত করার আরও  ক্ষমতা দিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

সাধারণত: পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সীমান্তে পাহাড়ায় থাকে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা । এতদিন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব ও অসমে সীমান্ত থেকে ১৫ কিলোমিটার ভিতর পর্যন্ত তল্লাশি অভিযান, বাজেয়াপ্ত ও গ্রেফতারির ক্ষমতা ছিল সীমান্তরক্ষী বাহিনী(বিএসএফ)-র হাতে। নতুন নিয়মে তা বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ, এখন থেকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সাথে সীমান্ত এলাকা থেকে ভারতের ৫০ কিলোমিটার সিমানা পর্যন্ত তল্লাশি, গ্রেফতারি ও বাজেয়াপ্ত করতে পারবে জওয়ানরা।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী আরও শক্তি বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গ, অসম  ও  পঞ্জাবে কর্তব্যরত বিএসএফ জওয়ানদের। শুধু বাংলা, অসম এবং পঞ্জাবই নয়, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে এমন  ১০ টি রাজ্য এবং ২ টি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের হাতেও ওই একই শক্তি দেয়া হয়েছে। এর ফলে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি হতে পারে, এমন যে কোন বেআইনি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা  নিতে পারবে বিএসএফ কর্মকর্তারা। আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের  তরফে এই নতুন নিয়ম জারি করা হয়েছে।

রাজস্থানে কার্যক্ষেত্রের পরিধি আগের মত  ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত রাখা হয়েছে। মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়ের মত উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলিতে  এতদিন সীমান্ত থেকে ৮০ কিলোমিটার ভিতর পর্যন্ত তল্লাশি ও গ্রেফতারির এক্তিয়ার ছিল সীমান্তরক্ষী বাহিনীর। নতুন নিয়মে ওই পাঁচ রাজ্যে তা ২০ কিলোমিটার কমিয়ে আনা হয়েছে। গুজরাটের ক্ষেত্রে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কার্যক্ষমতা সীমান্তের ৮০ কিলোমিটার থেকে কমিয়ে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দিল্লিতে এক পাকিস্তানী  জঙ্গিকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ । কিছুদিন আগে ভারতে ঢুঁকে  রাজধানীর অদূরে একটি বাড়িতে ভাড়ায় থাকে ঐ জঙ্গি। পরে বাড়ির মালিকের সহায়তায়  ভুয়া পরিচয়পত্র বানিয়ে গা ঢাকা দিতে গিয়ে ধরাপড়ে গোয়েন্দাদের হাতে। পরে সে গয়েন্দাকে এই তথ্য জানায়। এরপরই সীমান্ত নিরাপত্তা আরও জোরদার করে ভারত । বিশেষ কোনও ভাবেই যেন জঙ্গিরা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ  না করতে  পারে,  মূলত এই জন্য  সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-র ক্ষমতা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে অনেক রাজ্য ব্যাপকভাবে স্বাগত জানালেও  পঞ্জাবসহ বেশ কয়েকটি রাজ্য এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অসন্তোষ  প্রকাশ করেছে।  বেস কয়েকটি রাজ্যের সাধারণ মানুষের বক্তব্য, বিেসএফ-কে এত ক্ষমতা দেয়ায় সিমান্তে বিএসএফ কর্তৃক হত্যা ও নিরীহ বাসিন্দাদের নিপীড়ন বাড়বে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই নতুন বিজ্ঞপ্তির তীব্র নিন্দা জানিয়ে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি বলেন, “আন্তর্জাতিক সীমান্তে যে ৫০ কিলোমিটারের বেল্টের মধ্যে বিএসএফকে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের একতরফা সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাই। এই সিদ্ধান্ত সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার ওপর আক্রমণ। আমি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অনুরোধ জানাই অবিলম্বে এই অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন।” কিন্তু তার এই ব্যাখ্যায় স্বরা্ষ্ট্রমন্ত্রক জানায়, বিএসএফ-কে  সিআরপিসি-র অধীনে, পাসপোর্ট আইন এবং পাসপোর্ট (ভারতে প্রবেশ) আইনের অধীনে এই পদক্ষেপগুলি নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে। বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স অ্যাক্ট (বিএসএফ), ১৯৬৮ এর ১৩৯ ধারা অনুযায়ী  কেন্দ্রকে BSF-এর কার্যক্রমের ক্ষেত্র এবং ব্যাপ্তি বদলানোর ক্ষমতা দেয় রাষ্ট্র।