পিআইবি

নতুন দিল্লি ৮ ফেব্রুয়ারী :প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া সফর করেছেন। সফরকালে তিনি এলপিজি ইমপোর্ট টার্মিনাল ও প্রধানমন্ত্রী উর্জা গঙ্গা প্রকল্পের আওতাধীন ৩৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ দোভি – দুর্গাপুর প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন শাখা জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। শ্রী মোদী, হলদিয়া শোধনাগারের দ্বিতীয় ক্যাটালিটিক – আইসোডিওয়াক্সিন ইউনিটটির শিলান্যাস করেন এবং ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে হলদিয়ার রাণীচকে রেল লাইনের উপর ৪ লেনের উড়ালপুল উদ্বোধন করেছেন। এই অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল  এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এই উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও স্বচ্ছ জ্বালানী পাওয়ার ক্ষেত্রে পূর্ব ভারত সহ পশ্চিমবঙ্গের জন্য আজকের দিনটি একটি বিশেষ দিন। এই ৪টি প্রকল্পের মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানুষের সহজ জীবনযাত্রা ও সহজে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।  এই প্রকল্পগুলি হলদিয়াকে আমদানী – রপ্তানি ক্ষেত্রে বড় কেন্দ্র হিসেবে বিকশিত হতে সাহায্য করবে।

প্রধানমন্ত্রী এই সময়ে ভারতের জন্য গ্যাস ভিত্তিক অর্থনীতির প্রয়োজনের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এক দেশ, এক গ্যাস গ্রিড ব্যবস্থা এই উদ্দেশ্য পূরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য হ্রাস এবং গ্যাস পাইপলাইন নেটওয়ার্কের প্রসার ঘটানো এই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভারত যাতে সর্বোচ্চ গ্যাস ব্যবহারকারী রাষ্ট্রে পরিণত হয়, তার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সস্তায় এবং স্বচ্ছ জ্বালানী ব্যবহারে উৎসাহ দিতে এবারের বাজেটে হাইড্রোজেন মিশনের ঘোষণা করা হয়েছে।

শ্রী মোদী, পূর্ব ভারতের  জীবনযাত্রা ও ব্যবসা বাণিজ্যের মানোন্নয়নের জন্য রেল, সড়ক, বিমানবন্দর, বন্দর এবং জলপথের নানা প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেছেন। গ্যাসের অপ্রতুল সরবরাহের ফলে এই অঞ্চলে বড় শিল্প বন্ধ হয়ে গেছে। এই সমস্যার সমাধানে পূর্ব ভারতকে পূর্বাঞ্চলীয় ও পশ্চিমাঞ্চলীয় বন্দরগুলির সঙ্গে সংযোগ ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী উর্জা গঙ্গা পাইপলাইনের একটি বৃহৎ অংশ আজ উদ্বোধন করা হয়েছে। ৩৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ দোভি – দুর্গাপুর পাইপলাইনটি শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেরই নয়, বিহার ও ঝাড়খন্ডের ১০টি জেলাও এর সুফল পাবে। এর নির্মাণ কাজের সময় ১১ লক্ষ কর্ম দিবস সৃষ্টি হয়েছিল। এর ফলে পাইপের মাধ্যমে রান্নার জন্য এলপিজি এবং যানবাহনের জন্য সিএনজি সরবরাহ করা যাবে। সিন্ধ্রি ও দুর্গাপুর সার কারখানা নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস পাবে।

প্রধানমন্ত্রী জগদীশপুর – হলদিয়ার মধ্যে দুর্গাপুর – হলদিয়া শাখা এবং বোকারো – ধর্মা শাখার কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য গেইলকে নির্দেশ দিয়েছেন।

উজ্জ্বলার যোজনার ফলে এই অঞ্চলের রান্নার গ্যাসের চাহিদা বেড়েছে। এলপিজি পরিকাঠামোর উন্নতিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ৯০ লক্ষ মহিলাকে রান্নার গ্যাস বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৩৬ লক্ষ মহিলা তপশিলী জাতি ও উপজাতি গোষ্ঠীভুক্ত। গত ৬ বছরে পশ্চিমবঙ্গে এলপিজি গ্যাস ব্যবহারকারী ৪১ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৯৯ শতাংশ হয়েছে। এই বছরের বাজেটে উজ্জ্বলা যোজনায় আরো ১ কোটি বিনামূল্যে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। প্রচুর চাহিদার মোকাবিলার জন্য হলদিয়ায় এলপিজি ইমপোর্ট টার্মিনাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এখান থেকে পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা, বিহার, ঝাড়খন্ড, ছত্তিশগড়, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের ২ কোটির বেশি মানুষ এখান থেকে গ্যাস পাবেন এবং ১ কোটি মানুষ উজ্জ্বলা যোজনার সুবিধাভোগী হবেন।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেছেন, স্বচ্ছ জ্বালানীর জন্য অঙ্গীকারের কারণে বিএস – ৬ জ্বালানী কারখানার ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। ক্যাটালিটিক – ডিওয়াক্সিন ইউনিটটি লুব ভিত্তিক তেলের জন্য আমদানী নির্ভরতা কমবে। “আমরা এমন এক পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে চলেছি, যেখানে রপ্তানির করার মত দক্ষতা অর্জন করা  হবে।“

প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, কেন্দ্র, শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গকে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে  গড়ে তুলবার জন্য উদ্যোগী হয়েছে। এর জন্য বন্দরভিত্তিক উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ। কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় পোর্ট ট্রাস্টের আধুনিকীকরণের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হলদিয়া ডক কমপ্লেক্সের ক্ষমতা বাড়ানো এবং প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানিয়েছেন। বহুমুখী টার্মিনাল যোগাযোগের জন্য নতুন উড়ালপুল সাহায্য করবে। এর ফলে আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে হলদিয়া, গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠবে।