নিজস্ব প্রতিবেদক 

মহারাষ্ট্রে মহা-সংকটে উদ্ধব ঠাকরের  সরকার। প্রায় ৪২ জন বিধায়ক শিবির বদলে একনাথ শিন্ডের  সঙ্গে আসামের হোটেলে ঘাঁটি গেড়েছেন। মাত্র ১৩ জন বিধায়কই পড়ে রয়েছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে!‌ তাছাড়া,  শিবসেনা  নেতৃত্বের মাথায় চিন্তার ভাঁজ ফেলতে পারে সাংসদরাও।

সূত্রের খবর,  বিধায়কদের পথে হেঁটে উদ্ধবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে পারেন সাংসদরাও। বর্তমানে লোকসভায় ১৯ জন এবং রাজ্যসভায় তিনজন শিবসেনা  সাংসদ রয়েছে। সূত্রের খবর, থানের শিবসেনা সাংসদ রাজন ভিছারা, ওয়াসিমের সাংসদ ভাবনা গাওলি, রামতেকের সাংসদ ক্রুপাল তুমানে, কল্যাণের সাংসদ শ্রীকান্ত শিন্ডে এবং পালঘরের সাংসদ রাজেন্দ্র গাভিত শীঘ্রই একনাথ শিন্ডের  শিবিরে যোগ দিতে পারেন বলে সূত্রের খবর। অনেকের আশঙ্কা, সম্ভবত দু’জন সাংসদ রাজন ভিছারা এবং শ্রীকান্ত শিন্ডে গুয়াহাটির হোটেলেই আত্মগোপন করে রয়েছেন। যদিও শিবসেনা সাংসদ ক্রুপাল তুমানের দাবি, “আমি শিবসেনার সঙ্গেই রয়েছি। অন্য কাউকে আমি সমর্থন করছি না। আমার সম্পর্কে যা রটছে, তা নিতান্তই গুজব।

সংকট উত্তরোনের জন্য বৃহস্পতিবার সকালে বৈঠক ডেকেছিলেন উদ্বব ঠাকরে। ওই বৈঠকে তার সাথে থাকা  মাত্র ১৩ জন বিধায়কই উপস্থিত ছিলেন। তার পরেই একনাথ শিণ্ডের নেতৃত্বাধীন বিক্ষুব্ধদের ফিরে আসতে বললেন সেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত। তিনি বলেন,’ দরকারে তাদের দাবি মেনে বর্তমান জোট থেকে বেরিয়ে যাবে শিবসেনা। কিন্তু বিক্ষুব্ধদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গুয়াহাটি থেকে মুম্বইতে ফিরতে হবে।’‌
বুধবার থেকে গুয়াহাটির হোটেলে রয়েছেন একনাথ শিণ্ডে। তিনি দাবী করেন, তার সঙ্গে রয়েছেন ৪১ জন বিধায়ক। যা শিবসেনা–এনসিপি–কংগ্রেস জোট সরকার ভাঙার জন্য যথেষ্ট। আর সেটাই যে চাইছেন তিনি তা স্পষ্ট জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী শিণ্ডে। একনাথ শিন্ডের দাবি, আগের মতো বিজেপি–র হাত ধরে মহারাষ্ট্রের ক্ষমতায় বসুক শিবসেনা। কিন্তু  হিন্দুত্ব এজেন্ডা মেনে চলতে হবে তাকে। কংগ্রেস, এনসিপি–র হাত ছেড়ে দিতে হবে। কারণ গত আড়াই বছর রাজ্যে ক্ষমতায় থাকলেও বঞ্চিত হয়েছেন শিবসৈনিকরা।

বিক্ষুব্ধ শিবিরে যোগ দিয়েছেন বিধায়ক দীপক কেসরকার। তিনি জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের ইস্তফা তাঁরা চান না। বরং ‘‌স্বাভাবিক জোট নীতি’‌ মেনে বিজেপি–র হাত ধরে ক্ষমতায় ফিরুক শিবসেনা। আর এক বিক্ষুব্ধ বিধায়ক সঞ্জয় শিরসাতের অভিযোগ, ‘‌গত আড়াই বছর আমরা মুখ্যমন্ত্রী বাসভবনে ঢুকতেই পারিনি’‌।

এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ারের পরামর্শ মেনে বিক্ষোভ দমাতে একনাথ শিণ্ডেকেই মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন উদ্ধব ঠাকরে। শিণ্ডে তা মানেননি। উল্টে বিজেপি–র হাত ধরতে বলেন উদ্ধবকে। এবার যেন সেই পথেই এক পা এগোল শিবসেনা। তাহলে কি মধ্যপ্রদেশের মতোই ভাঙতে চলেছে মহারাষ্ট্র সরকার!‌ নাকি রাজস্থানে গেহলট সরকারে মতো বেঁচে যাবে উদ্ধবের ঘর!‌