গোপাল ভট্রাচার্য্য

রাত পোহালেই ভারতের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হবে। বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় রাজ্যের ১১ জেলার ৫৮ আসনে ভোটগ্রহন করা হবে। নির্বাচন কমিশনের জারি করা নির্ঘণ্ট অনুযায়ী এবারের উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন ৭ দফায় অনুষ্ঠিত হবে। দেশের সবথেকে বড় রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন হলেও জাতীয় রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্বাচনের গুরুত্ব অসীম।পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের প্রথম দফার ভোটে  যোগী আদিত্যনাথ মন্ত্রিসভায় নয় মন্ত্রীর ভোট-ভাগ্য নির্ধারণ করবে ভোটাররা। এই মন্ত্রীদের মধ্যে

রয়েছেন মথুরা আসন থেকে শ্রীকান্ত শর্মা, গাজিয়াবাদ আসন থেকে অতুল গর্গ, থানা ভবন থেকে সুরেশ রানা, মুজফ্ফরনগর থেকে কপিলদেব আগরওয়াল ও আতরৌলি আসন থেকে সন্দীপ সিংহ।  অন্য যে মন্ত্রীরা ভোটারদের পরীক্ষার মুখে পড়বেন তাঁরা হলেন, ছাতা আসনে লক্ষ্মীনারায়ণ চৌধুরী, শিকরপুর আসন থেকে অনিল শর্মা, আগ্রা ক্যান্টনমেন্ট থেকে জিএস ধর্মেশ এবং হস্তিনানগর থেকে দীনেশ খটিক। এই পর্বে অন্য যে হেভিওয়েট প্রার্থীরা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য  আগ্রা গ্রামীণ আসনের প্রার্থী উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন রাজ্যপাল বেবি রানি মৌর্য, উত্তরপ্রদেশ বিজেপির সহ সভাপতি পঙ্কজ সিংহ (নয়ডা আসন) এবং কৈরানা আসনের প্রার্থী মৃগাঙ্কা সিংহ। প্রথম পর্বে যে আসনগুলিতে ভোটগ্রহণ করা হবে, গত বারের নির্বাচনে এরমধ্যে বেশিরভাগ আসনেই দাপটের সঙ্গে জয় পেয়েছিল বিজেপি। পাঁচ বছর আগে ৫৮ আসনের মধ্যে ৫৩ টিই বিজেপির দখলে এসেছিল। অন্যদিকে, বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) এবং সমাজবাদী পার্টি (এসপি) দুটিকরে আসনে এবং রাষ্ট্রীয় লোকদল (আরএলডি) একটি আসনে জিতেছিল। এবারের নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে সরাসরি লড়াই মূলত: এসপি-আরএলডি জোটের। তবে প্রথম পর্বের বেশ কয়েকটি আসনে ভালো প্রভাব রয়েছে বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)-র।

 ভারতীয় রাজনীতিতে কথিত আছে ‘দিল্লির রাস্তা উত্তর প্রদেশ হয়ে যায়’, তাই এবারের নির্বাচন ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ।  তাই দ্বিতীয় বারেরর জন্য রাজ্যের শাসনভার ধরে রাখতে মরিয়া বিজেপি। উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয় পেলে লোকসভা দখলে রাখার পথ যে অনেকটাই মসৃণ হবে সেকথা ভাল করেই জানেন নরেন্দ্র মোদী- অমিত শাহ। সেই কারণে ভোটের আগেই রাজ্যে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচির উদ্বোধনে গিয়ে কৌশলে বারবার রাজ্যের জনগণকে বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উত্তর প্রদেশের মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও।

অখিলেশ যাদব নেতৃত্বাধীন সমাজবাদী পার্টির কাছেও এবারের নির্বাচন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বিজেপির জন্য  সমাজবাদী পার্টি (সপা)-র পায়ের তলার মাটি অনেকটা আলগা হলেও বিধানসভা ভোটকে হাতিয়ার করে প্রচার তুঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন মুলায়ম পুত্র অখিলেশ। মঙ্গলবার অখিলেশকে সমর্থন জানিয়ে উত্তর প্রদেশে প্রচারে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কংগ্রেসের জমি দখল করতে  মরিয়া  কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও। বিএসপি নেত্রী মায়বতীর প্রভাব এবারের উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে তেমন চোখে না পড়লেও লড়াইয়ে আছেন তিনিও।  ভোটের ফল ঘোষণা হবে ১০ মার্চ।