প্রণব ভট্রাচার্য্য
ভারতের পাঞ্জাবে কংগ্রেসকে ধরাশায়ী করে বিপুল ভোটে জয়ের পরই বিজেপি বিরোধী প্রধান মুখ হয়ে ওঠার চেষ্টায় অরবিন্দ কেজরীবাল। জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী হয়ে ঊঠে অরবিন্দ কেজিবরায়ল নেতৃত্বধীন আমাদমিপার্টি। আর সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে রাজধানী দিল্লির বাইরে পঞ্জাবের পর এবার অন্যান্য রাজ্যে নিজেদের সংগঠন বাড়াতে পা বাড়াচ্ছে আপ। সোমবার অরবিন্দ কেজরীবাল নেতৃত্বাধীন আপ হরিয়ানার ১৫ জন প্রাক্তন বিধায়ক, মন্ত্রী এবং গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন সমাজকর্মী আপ-এ যোগদান করেছেন। এদিন দিল্লিতে এই যোগদান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন দিল্লির স্বাস্থ্য মন্ত্রী সত্যেন্দর জৈন। ওই যোগদান অনুষ্ঠান থেকে দলের তরফে ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে ৬৮ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে আম আদমি পার্টি।।
যোগদান অনুষ্ঠানের পর আপ প্রধান বলরেছেন, ”আমরা এই বছরের শেষের দিকে হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা অনুষ্ঠিত হবে, ওই নির্বাচনে আমরা লড়বো। আপ প্রধানের বক্তব্যে স্পষ্ট যে হিমাচল প্রদেশে নিজেদের সংগঠন বাড়াতে ইতিমধ্যেই কোমর বেধেছে আপ। হিমাচলে এই বছরের ডিসেম্বরেই নির্বাচন হওয়ার কথা। সেখানে ৬৮ টি আসনে আপ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বলে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে। দিল্লির আপ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, “হিমাচল প্রদেশ পঞ্জাব সংলগ্ন এবং আমরা পার্বত্য রাজ্যে নিজেদের পূর্ণ শক্তি দেব। আপ সাধারণ মানুষের কাছেও এ ব্যাপারে মতামত চাইবে। হিমাচলের বর্তমান শাসকদের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ও শিক্ষাক্ষেত্রে জনসাধারণ ভিষণভাবে সমালোচনা মুখর এবং এই নিয়ে বিরোধীদের মুখে সেখানে সমালোচনার ঝড় বইছে। এই সুযোগ নিয়ে মানুষের মন জয় করে নেয়ার জন্য হিমাচলের এই সমস্ত সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যনিয়ে নির্বাচনী ইস্তেহার জারি করে সমস্ত প্রতিশ্রুতির কথা বলা হবে। তেমনি এইইস্তেহার ভোট প্রচারে ভোটারদের মধ্যে খুব যেমন কাজে লাগা
হিমাচলের পাশাপাশি আপের কেজরীবালের নিজের রাজ্য হরিয়ানায় নিজেদের সংগঠন দৃঢ় করার পরিকল্পনা রয়েছে। ২০২৪ সালে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে হরিয়ানায়। কেজরীবালের নেতৃত্বাধীন দলটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নিজের রাজ্য গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্তও ঘোষণা করেছে ইতিমধ্যেই। সোমবার একটি টুইটার পোস্টে আপ লিখেছে, “দিল্লি ও পঞ্জাবের পর এখন গুজরাট চায় ‘আম আদমি পার্টি’। এই লক্ষ্য নিয়ে আপ চলতি বছরের এপ্রইলেই গুজরাতে ‘তিরঙাশুরু করবে”। গুজরাটের সমস্ত জেলার সমস্ত তহসিল এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে এই তিরঙা যাত্রা বের করা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানানো হয়। ১৯৯৫ সাল থেকে ভারতের পশ্চিম প্রান্তের এই রাজ্যটি বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে। নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে ১৩ বছর ধরে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
উল্লেখ্য, আপ পশ্চিমবঙ্গেও নিজেদের সংগঠন ঢেলে সাজানো শুরু করেছে। পশ্চিমবঙ্গেও দল ভারী করার জন্য ইতোমধ্যে আপ-র একটি অন্তবর্তীকালিন রাজ্য কমিটি গঠন করেছে।রোববার থেকেই পশ্চিমবঙ্গে তাদের সদস্য সংগ্রহ অভিযা শুরু হয়েছে। রোববার বিকেলে কলকাতার রাজপথে শোভাযাত্রা করে পশ্চিবঙ্গবাসীকে এই রাজ্যে আম আদমি পার্টির উপস্থিতির জানান দেয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে আপ-র উপস্থিতি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ও সাংসদ অধীর চৌধুরী সংবাদ-কে বলেন, ভারত একটি বহুদলীয় গণতান্ত্রিক দেশ। ভারতের যে কোন রাজ্যে যে কোন দল তাদের সংগঠন বিস্তার করতে পারে। জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক দলে অবস্থান করতে হলে আঞ্চলিক দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনের একটি কোড আব কনডাক্ট মাণ্য করতে হয়। আপ দিল্লির পরে পাঞ্জাবে ইতিমধ্যে সরকার গঠন করেছে, গোয়াতেও তারা দুটি আসনে জিতেছে। তাই আপ জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের আবস্থান করে নিতে পেরেছে। পশ্চিমবঙ্গে তাদের উপস্থিতিতে আমরা স্বাগত জানাবো।