শুরু হলো কলকাতা-ঢাকা সরাসরি ‘সৌহার্দ্য’ বাস পরিষেবা, পদ্মাসেতু পেরিয়ে দুপুরেই কমলাপুর
বিশেষ সংবাদদাতা, কলকাতা
কলকাতা : আজ (সোমবার)থেকে ফের আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো কলকাতা-ঢাকা শ্যামলী যাত্রী পরিবহন-র ভারত-বাংলাদেশ ‘সৌহার্দ্য’ বাস পরিষেবা। আজ সকাল ৮ টায় সৌহার্দ্য সল্টলেক করুনাময়ি বাস স্ট্যান্ড থেকে ১২ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। সৌহার্দ্য প্রথম যাচ্ছে বাংলাদেশের নয়া স্বপ্ন পদ্মাসেতুর উপর দিয়েই।
শ্যামলী যাত্রী পরিবহনের কর্ণধর অবনী ঘোষ ‘সংবাদ’ প্রতিনিধিকে এ্ই তথ্য জানিয়ে বলেন, এখন থেকে সৌহার্দ্যে ব্রেকফাস্ট হবে কলকাতায় লাঞ্চ ঢাকায়। চার থেকে পাঁচ ঘন্টায় সৌহার্দ্য ঢাকায় পৌছাবে। তিনি বলেন, সৌহার্দ্য সপ্তাহে তিনদিন প্রতি সোম-বুধ ও শুক্র বার কলকাতা থেকে ছাড়বে। অন্যদিকে ঢাকার কমলাপুর থেকে কলকাতার উদ্যেশ্যে ছেড়ে আসবে প্রতি মঙ্গল-বুধ ও শনিবার সকালে। তিনি বলেন, নতুন করে এই পরিষেবা চালু করা হলেও বাসভাড়া আগে যা ছিল, তা–ই থাকবে। অর্থাৎ কলকাতা ঢাকার বাসভাড়া থাকছে সেই ১ হাজার ৪০০ টাকাই। ভাড়া বাড়ানো হবেনা। সাথে থাকবে টিফিনেরও ব্যবস্থাদুই বছর আগে ২০২০ সালের ১২ মার্চ থেকে করোনার কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এই বাস পরিষেবা। ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের সহায়তায় সৌহার্দ্য নামের এই বাস পরিষেবা আজ থেকে ফের শুরু হলো। শ্যামলী যাত্রী পরিবহনের কর্ণধর অবনী ঘোষ জানিয়েছেন, ‘আমরা আবার কলকাতা-ঢাকা-কলকাতার মধ্যে যাত্রীবাহী বাস চালু করার অনুমতি পেয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা কলকাতার সল্টলেকের করুণাময়ী আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনালকে নতুন করে সাজিয়ে তুলেছি। আজ সোমবার সকালে আনুষ্ঠানিক ভাবে কলকাতার কিড স্ট্রিট থেকে এই বাস ছেড়ে আসলেও সল্টলেকের করুণাময়ী বাস টার্মিনাল থেকে্ই এই যাত্রীবাহী বাস চলাচল করবে। কলকাতা-ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী বাস ‘শ্যামলী যাত্রী পরিবহন সংস্থা’র কর্ণধার অবনী কুমার ঘোষ এমনই জানিয়েছেন।অবনী ঘোষ বলেন, সৌহার্দ্য পরিষবার যাত্রীদের সুবিধার জন্য (যাত্রীদের অযথা দুর্ভোগ লাঘবে) ভারতের পেট্রাপোল সিমান্তে ও বাংলাদেশের বেনাপোল সিমান্তে বিশেষ ইমেগ্রেসন কাউন্টারের ব্যাবস্থা থাকবে। তিনি যাত্রীদের আরও সুবিধা দেয়ার জন্য তিনি চেষ্টা করবেন।
ইতিমধ্যেই বেসরকারি উদ্যোগে চালু হয়েছে কলকাতা-ঢাকা-আগরতলার মধ্যে বাস চলাচলও। এই বাস কলকাতা থেকে সোম, বুধ ও শুক্রবার করুণাময়ী বাস টার্মিনাল থেকে ছাড়বে দুপুর পৌনে ১২টায়। আর আগরতলা থেকে ছাড়বে পরের দিন বিকেল চারটেয়। কলকাতা-আগরতলার ভাড়াও বাড়ানো হয়নি। আগের মতো ১ হাজার ৮০০ টাকাই থাকছে৷ তবে কলকাতা থেকে বাকি তিন দিন মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনিবার এই পথে বাস চালাবে বাংলাদেশের বিআরটিসি। উভয় পরিবহণ সংস্থাই রবিবার বন্ধ রাখবে এই বাস পরিষেবা।
অবনী ঘোষ আরও বলেছেন, একই সঙ্গে তাঁরা সপ্তাহের তিন দিন কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা রুটেও বাস চালাবে। ১৯৯৯ সালের ১৯ জুন কলকাতা-ঢাকার মধ্যে প্রথম শুরু হয়েছিল যাত্রীবাহী বাস চলাচল। আর আগরতলা-কলকাতার মধ্যে বাস চলাচল শুরু হয় ৬ জুন ২০১৫ থেকে।
এদিকে কলকাতার করুনাময়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে এদিন সকাল সৌহর্দ্য ৮টায় ছেড়ে যায় কিন্তু সেই বাস রাত সাড়ে ৮ টায়-ও ঢাকায় পৌছেনি। এ ব্যাপারে ঢাকা থেকে অনেকে আমাদের অফিসে ফোন করে জানতে চেযেছেন, যে বাসটি ঢাকায় এসে লাঞ্চ করাবেন বলা হলেও ঢাকায় পৌছাতে কেন রাত ৯টা বাজলো। সংবাদ গ্রাহকদের এই অভিযোগ পেয়ে এই প্রতিনিধি শ্যামলি যাত্রী পরিবহনের মালিক অবনি ঘোষের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রায় দুবছরেরও বেশী সময় পর সৌহার্দ্য নতুন করে আজ চালু হয়। পেট্রাপোল ও বেনাপোল ইমিগ্রেসনে কাগজপত্র জমা দেয়া ছাড়াও প্রথম দিনের ইমিগ্রেসন ও কাসটমস-এ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে বেশ সময় লেগেছে। পরে পথে পথে সৌহার্দ্যকে নতুনভাবে পেয়ে যশোর, খুলনা সহ বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যাপক সংবর্ধিত করা হয়। এই কারণে মানুষের ভালোবাসার উচ্ছাস এড়িয়ে বাস এগুতে বেগ পেতে হয়েছে। এই কারণে প্রথমদিন এই দেরীটা হলো। এর পরের নির্ধারিত ট্রিপগুলো ঢাকার কমলাপুরে দুপুরের মধ্যে্ই পৌছে যাবে। আবনি বাবু এমনটাই জানিয়েছেন। তিনি জানান প্রথম দিন আমি নিজেই সমস্ত কিছু সামলানোর জন্য বাসে যাত্রী হিসেবে ছিলাম। তনি জানান বাংলাদেশ সময় সোমবার রাত ৯টায় সৌহার্দ্য ঢাকার কমলাপুরের বাসস্ট্যান্ডে পৌছায়।