ভিওসি নিউজ ডেক্স

ভিওসি নিউজ ডেক্সত্রিপুরায় সিপিআইএম-র সাথে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক সমীকর   ণ ফের প্রশ্নবিদ্ধ হলো। পশ্চিবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে নিরাঙ্কুস জয়লাভ করার পর কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে হটাতে জাতীয় পর্যায়ের রাজনীতিতে নামার ঘোষণা দেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এরই ধারাবহিকতায় ত্রিপুরা থেকেই প্রথম ওই রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস।এই নিয়ে ত্রিপুরায় বিজেপির সাথে রাজনৈতিক সংঘাত শুরু হয়।এক পর্যায়েয়ে সেখানে রাজনৈতিক সংঘাত বিশাল আকার ধারণ করে। বিজেপি-তৃণমূল-র উপর্যপুরী রাজনৈতিক সংঘর্ষে আহত হয় তৃণমূলের নেতা ও কর্মী-রা। নানা ঘটনা অঘটনের প্রেক্ষাপটে অসহায় তৃণমূল কংগ্রেসের পাশে দাঁড়ায় রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সিপিআইএম। সিপিএম-র সমর্থন পেয়ে কিছুটা ঘুরে দাড়ায় তারা। সিপিআইএম-র অভিযো ঘরে দাড়ানোর পর তৃণমূল কংগ্রেসে-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যন্য নেতাদের নানা রকম কু-মন্তব্যে সিপিআইএম তাদের কাছ থেকে আলগা হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত সিপিএম সেখানে একলা চলার সিদ্ধান্ত নেয়।তা আরও পরিস্কার হয় আগমী মাসে সেখানে অনুষ্ঠিব্য পৌর নির্বাচন হবে, সেই আসন্ন নির্বাচনে  সিপিআইএম একাই লড়াই করার সিদ্ধান্ত নেয়। এমনকি তারা বুধবার সকালে আসন্ন নির্বাচনে পৌরনিগমের ৫১টি আসনের মধ্যে ৩৫টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। বাকি ১৬টি আসনে প্রাথীর নাম পরে ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে তারা। জোটের ব্যাপারে  ত্রিপুরার বামফ্রন্ট বরাবরই হার্ডলাইনার। নতুন প্রার্থী তালিকায় সেই সিদ্ধান্তেরই প্রতিফলন দেখা গেল আবার। ফ্রন্টের তরফে জানানো হয়েছে,  বাকি  সব আসনগুলোতে  তারা নিজেরাই প্রার্থী দেবেন।


বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকা সম্পর্কে তৃণমূল কংগ্রেসের ত্রিপুরা প্রদেশ স্টিয়ারিং কমিটির কনভেনর সুবল ভৌমিক বলেন,  তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও  ১ নভেম্বর তাদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে এবং সব আসনেই তারা গ্রহণযোগ্য প্রার্থী দেবে। তিনি আরও বলেন যে ত্রিপুরায় সিপিআই(এম) দীর্ঘদিন ক্ষমতায় ছিল।নানা অনিয়মের কারণে বিজেপির কাছে পরাজিত হয় তারা। সেখানে তাদের লড়াই জনগণ কিভাবে নেবে সেটা দেখার বিষয়। তিনি বলেন,  তৃণমূল ত্রিপুরায় জেতার লড়াই করবে। তাদের কাছে সব আসনের জন্য প্রার্থীদের নাম এসে গেছে এবং তারা সেখান  জেতার লড়াই করবেন বলেই সেখানে আবেদন বাছাই করে  গ্রহণযোগ্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবেন। পশ্চিমবঙ্গে সিপিআই(এম)-এর প্রার্থী তালিকার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন যে বামফ্রন্ট ২৯৪টি আসনে সবার আগে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল কিন্তু তারা কোনও আসনেই জিততে পারেনি। ত্রিপুরায় শাসক দলের সঙ্গে তৃণমূলের লড়াই হবে বলেই তিনি আশাবাদী।

বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকা বিষয়ে সিপিআই(এম)-এর কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদার বলেন, ত্রিপুরার বাস্তব পরিস্থিতি বিচার করে সেখানকার পার্টি একা লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পার্টির সিদ্ধান্ত ছিল যে  রাজনৈতিক জোট না হলেও রাজ্যগুলি সেখানকার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে ট্যাকটিকাল এলায়েন্স করতেই পারে। তিনি আরও বলেন  ত্রিপুরার বাস্তব পরিস্থিতি দেখে মনে হয় যে সেখানে বামফ্রন্ট, বিশেষ করে সিপিআই(এম) স্বাধিনভাবে লড়াই করলেই মানুষের সমর্থন পাবে। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে কি পরিস্থিতি থাকে সেদিকেও নজর থাকবে বলে জানান তিনি।

এদিকে ত্রিপুরায় ফের তৃণমূল কংগ্রেসের উপরে হামলার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। অমরপুর আজ তৃণমূল কংগ্রেসের সভা ছিল। সেই সভায় যাওয়ার পথে দলের সমর্থকদের উপরে হামলা চালানো হয়। এমনটাই অভিযোগ করা হয় তৃণমূলের তরফে। পাশাপাশি অভিযোগ, সভায় যাওয়ার পথে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের গাড়ি আটকে দেয় পুলিস। বাধা পেয়ে আগরতলা ফিরে গেলেন কুণাল ঘোষ।

তৃণমূলের অভিযোগ, অমরপুরের নতুন বাজার এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের উপরে হামলা করা হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে গাড়ি। তিনজনকে মারধর করা হয়েছে। তাদের মারধরে তারা গুরুতর আহত হয়। এর মধ্যে মামুন খানের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে চিকিৎসার জমন্য   কলকাতায় আনা হয়েছে।

এনিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, এখানে জঙ্গলরাজ চলছে। আগরতলা থেকে অনেকটা দূরে অমরপুর। সেখানেই তৃণমূলের একটি কর্মসূচি ছিল।  তার জন্য অনুমতিও নেওয়া হয়েছিল। সভায় আসার পথে তৃণমূল সমর্থদের উপরে হামলা চালায় বিজেপি। কুনাল বলেন,  ত্রিপুরায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে হামলার পর থেকে আজ পর্যন্ত একের পর এক তৃণমূল নেতা কর্মীদের উপর হামলা চালালেও একজনকেও গ্রেফতার করেনি এখানকার পুলিস।

ত্রিপুরার ওই ব্যাপারে রাজ্য বিজেপি মুখ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, দিনহাটায় নির্বাচনে  আমরা প্রচার করতে পারছি না। আমাদের এক নেতাকে সেখানে হোটেলে থাকতে দেওয়া হয়নি। হোটেল মালিক বলছেন, ওই নেতাকে থাকতে দিলে হোটেল ভাঙচুর হয়ে যাবে। রাজ্য আমাদের অনেক কর্মী খুন হয়েছেন, দলের বহু সমর্থক রেশন পাচ্ছে না। আঠ হাজার কর্মী ঘরছাড়া। এই তো অবস্থা। ওরা আবার ত্রিপুরায় গিয়ে বড় বড় কথা বলে আর স্বপ্ন দেখে