ভিওসি রিপোর্ট

অবশেষে আজ (সোমবার)  বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএএর)মামলার শুনানী শুর  সুপ্রমি কোর্টে। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি সরকারের তৈরী এই আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে  যে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল, তা একযোগে শুনবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ (ইউইউ ) ললিত ও বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাটের  বেঞ্চ। আইনটি পাশ হওয়ার পর ভারতব্যাপী ব্যাপক বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল। তখন সিএএ-র বিরুদ্ধে  ভারতীয় ইউনিয়ন মুসলিম লীগের  পক্ষ থেকে সিএএ-কে চ্যালেঞ্জ করে  আইনটি বাতিলের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায়। আবেদনকারী ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগের পক্ষে  আইনজীবী   এই আইনটি নাগরিক সমতার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে এবং ধর্মের ভিত্তিতে  বিভাজন সৃষ্টির মাধ্যমে অভিবাসীদের একটি অংশকে নাগরিকত্ব প্রদান করতে চায়। তাই আইনজীবী পল্লবী প্রতাপ  সিএএ আইনটির কার্যক্রমে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ  চায়।

কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের দায়ের করা আবেদনে বলা হয়েছে , এই আইনটি সংবিধানের  পরিপন্থী পরিকল্পিত  মৌলিক অধিকারের উপর একটি “নির্ভর আক্রমণ” এবং ” অসম” হিসাবে বিবেচনা করে।  আইনটি দুটি শ্রেণীবিভাগ তৈরি করে, যেমন, ধর্মের ভিত্তিতে শ্রেণীবিভাগ এবং  ভৌগলিক ভিত্তিতে শ্রেণীবিভাগ,  উভয় শ্রেণীবিভাগ সম্পূর্ণরূপে অযৌক্তিক বিবেচিত কর।

অন্যান্য পিটিশনকারীদের মধ্যে রয়েছে মুসলিম সংস্থা জমিয়ত উলামা-ই-হিন্দ, অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (এএএসইউ), পিস পার্টি, সিপিআই, এনজিও ‘রিহাই মঞ্চ’ এবং সিটিজেনস অ্যাগেইনস্ট হেট, অ্যাডভোকেট এমএল শর্মা এবং আইনের ছাত্ররাও শীর্ষ আদালতে আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল।

পরে বিভিন্ন পর্যয়া থেকে আরও  ২২০টি পিটিশন জমা পড়ে। প্রধানবিচারপতির বেঞ্চ সেই সব পিটিসনগুলো আজ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন।

১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯-এ   ওই আবেদনের শুনানির পর   নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের (সিএএ) কার্যক্রমটির জন্য স্থগিতাদেশ  না দিয়ে  এ ব্যাপারে  কেন্দ্রকে নোটিশ জারি করেছিল শীর্ষ আদালত, এবং ২০২০ সালের জানুয়ারির  দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে  হলফ নামা জমা দিতে বলা হয়রেছিল।  কোভিড-১৯-র কঠোর বিধিনিষেধের কারণে মামলাটির কাযরক্রম বন্ধ থাকে।  মামলাটির সাথে   বিপুল সংখ্যক আইনজীবী এবং মামলাকারী  জড়িত ছিল।

প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২৮ আগস্ট। চলতি বছরের ৮ নভেম্বর তিনি অবসর নেবেন। তার মেয়াদ মাত্র ৭৪ দিনের।  পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হওয়ার কথা ধনঞ্জয় যশবন্ত (ডি ওয়াই) চন্দ্রচূড়ের। প্রধান বিচারপতি ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন। প্রধান বিচারপতি ললিত ও বিচারপতি চন্দ্রচূড় দুজনেই বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতার বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ করেছেন। দুজনেই জমে থাকা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে আগ্রহী।