কারণ অবৈধ চাঁদা আদায় : বন্ধের পথে বীরভূমের পাথর শিল্পাঞ্চল

আবারো পাথর শিল্পাঞ্চল প্রায় বন্ধের মুখে। গত কয়েক বছর আগে মোহাম্মদ বাজার, রামপুরহাট সালভাদরা, প্রভৃতি এলাকায় পাথরের গাড়ি আটকে চাঁদা আদায়ের ঘটনা ঘটেছিল। পরবর্তীকালে প্রশাসনের তৎপরতায় এবং স্থানীয় মানুষজনের তৎপরতায় চাঁদা আদায় অনেকটাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে আবারও নতুন করে চাঁদা আদায় শুরু করেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। ঘটনায় প্রকাশ রামপুরহাটের পাথর শিল্পাঞ্চল থেকে পাথর নিয়ে যে সমস্ত ট্রাক বা লরি ভীন জেলায়  পাড়ি দিচ্ছে আর এই পাড়ি দেওয়ার সময়ই প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টি জায়গায়  রাস্তা আটকে চাঁদা তুলছে স্থানীয় কিছু বাসিন্দা। চাঁদা না দিলেই ট্রাক বা লরির চালক এবং খালাসিকে নামিয়ে মারধর করা হচ্ছে। ফলে অনেক গাড়ি চালক পাথর বোঝায় গাড়ি নিয়ে যেতে চাইছে না। চাঁদার জুলুম এতটাই যে কোথাও ১০০ কোথাও ২০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। চালকরা না দিতে পারলেই তাদের গাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে। প্রশাসন জেনে বুঝেও বন্ধ করতে পারছে না। অন্যদিকে না দেখার ভান করে পুলিশ প্রশাসন। মেন রাস্তায় বাঁশ দিয়ে গাড়ি আটকে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। চাঁদা নেওয়ার কোন নির্দিষ্ট কারণ নেই এমনই অভিযোগ করেছেন পাথর ক্রাসার ব্যবসায়ীরা। রামপুরহাট থেকে দুমকা রাস্তায় এই ধরনের চাঁদার জুলুম দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। এরই প্রতিবাদে বুধবার আইনি হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে রামপুরহাট পাথর ক্র্যাসার ব্যবসায়ীরা স্মারকলিপি জমা দিলেন।রামপুরহাট মহকুমা শাসকের কাছে। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এইভাবেই যদি জোর জুলুম করে চাঁদা আদায় করা হয় তাহলে আগামী দিনে কোন গাড়ি রামপুরহাট পাথর শিল্পাঞ্চলে আসতে চাইবে না। ফলে বিপর্যস্ত হবে পাথর শিল্পাঞ্চল। চাঁদার অংক যত বাড়বে পাথরের দামও সমপরিমাণ বেড়ে যাবে।  ফলে মানুষ পাথর নিতে চাইবে না। বন্ধ হয়ে যাবে ক্যাসার শিল্প। কাজ হারাবে কয়েকশো শ্রমিক। তাই ক্যান্সার ব্যবসায়ীরা জানায় যত দ্রুত সম্ভব প্রশাসনকে এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে হবে।

অনুব্রত ঘনিষ্ঠদের নামে-বেনামে বহু জমির নথি উদ্ধার করেছে সিবিআই

জমি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে জোর তল্লাশি চালায় সিবিআই আধিকারিকরা।অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের নামে বল্লভপুরে দুই বিঘা জমি, দেহরক্ষী সায়গল হোসেন ও তাঁর আত্মীয়দের নামে জমি, অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বোলপুর পৌরসভার সাফাইকর্মী বিদ্যুৎ বরণ গায়েনের নামে একাধিক জমি রেজিষ্ট্রেশনের নথি পেয়েছে সিবিআই । এছাড়াও,এই জমি রেজিষ্ট্রেশনে নগদ লেনদেন হয়েছিল, নাকি চেক মারফৎ লেনদেন হয়েছিল, সেই চেক কার নামে ছিল সেই সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করতে তৎপর সিবিআই অফিসারেরা।অনুব্রত মণ্ডল যাঁদের কাছ থেকে জমি কেনেন গরু পাচার মামলার তদন্তে বোলপুরে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, নীলাঞ্জন পাণ্ডে ও বিশ্বনাথ রায়ের বাড়িতে হানা দিল সিবিআই।জানা যায়,এঁদের কাছ থেকে জমি, পুকুর, মুড়ি মিল, বাগান বাড়ি কিনেছিলেন বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।সেই সমস্ত নথি নিয়ে বিক্রেতাদের জেরা করেন তদন্তকারী অফিসারেরা ৷ বোলপুর পৌরসভার 22 নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাপুরে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও বিশ্বনাথ ঘোষের বাড়িতে যায় সিবিআই । জানা গিয়েছে, রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বাবা স্বর্গীয় হংসগোপাল ঘোষের কাছ থেকে বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডল জমি ও বাগানবাড়ি কিনেছিলেন ৷অন্যদিকে, বাড়ির পাশে একটি পুকুর অনুব্রত মণ্ডল কেনেন বিশ্বনাথ রায় ও তাঁর ভাই সন্দীপ রায়ের কাছ থেকে ৷ এক বছর আগে সেই পুকুর রেজিস্ট্রিও করা হয় ৷ তাই এই দু জনের বাড়িতে গিয়ে তদন্ত চালান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা ৷ একই ওয়ার্ডে নীলাঞ্জন পাণ্ডে নামে এক ব্যক্তির বাড়িতেও যায় সিবিআই ।

প্রবল বজ্রসহ বৃষ্টিপাতে রামপুরহাটে জনজীবন বিপযরস্ত, বহু মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত

কয়েকদিন ধরেই বীরভূমে শুরু হয়েছে বজ্রপাত সহ বৃষ্টি ।বিশেষ করে দুপুর থেকে রাত্রি পর্যন্ত দফায় দফায় চলছে বৃষ্টিপাত। আর এই বৃষ্টিপাতের কারনে  রামপুরহাটের বেশ কিছু মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জেলার কাঁচা বাড়িতে বসবাসকারী মানুষ ভয়ে দিন রাত কাটাচ্ছে । কখন বাড়ি ভেঙে পড়বে এই নিয়ে সর্বদা ভীত সন্ত্রস্ত বীরভূমের  বাসিন্দারা ।রামপুরহাটে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি  হওয়ার ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা ভয়ে ভয়ে রাত কাটাচ্ছে । কয়েকদিন ধরেই  বিপদ পিছু ছাড়ছে না রামপুরহাট বাসীর। পৌরসভার ১০ নম্বর  ওয়ার্ডের একটি মাটির বাড়ি  বৃষ্টিতে পড়ে যায় ।যেখানে বসবাস করত ফারুক শেখ এবং তার পরিবার। অল্পের জন্য রক্ষা পান ফারুক শেখ তার দুই সন্তান এবং স্ত্রী।
বুধবার রাত্রে হঠাৎ করেই তাদের বাড়ি ভেঙে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষজন ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করেন । ফারুক শেখের বাড়ির অদূরে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের বাড়ি । তিনিও ছুটে এসে উদ্ধারের জন্য হাত লাগান। সামান্য আহত হন ফারুক শেখ । বাড়ি ভেঙে যাওয়ার কারণে একপ্রকার কোথায় থাকবেন এই নিয়েও তিনি চিন্তায় পড়ে যান ।আজ  বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে আসেন রামপুরহাট পৌরসভার পৌরপতি সৌমেন ভকত। তিনি ফারুক শেখ এবং তার পরিবার কে নিরাপদ জায়গায় সড়িয়ে নিয়ে যান ।  তিনি জানতে চান ফারুক শেখের বাড়ি এতদিন হয়নি কেন? কাউন্সিলর জানান জায়গা নিয়ে কিছুটা গন্ডগোল হওয়ার কারণে ফারুক শেখের বাড়ি তৈরি হয়নি। এরপরই সৌমেন ভকত ফারুক শেখের পরিবারকে খাবার-দাবারের বন্দোবস্ত করেন । সৌমেন ভকতের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রামপুরহাট শহরের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ওয়াসিম আলী এবং দলীয় কর্মীরা ।রামপুরহাট পৌরসভার পৌরপতি জানান অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে ফারুক শেখ ও তার  পরিবার।  তিনি জানান যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। কিন্তু প্রশ্ন একটাই এতদিন ধরে ফারুক শেখের বাড়ি তৈরি হলো না কেন ? কি এমন জটিলতা রয়েছে যে তার বাড়ি তৈরি করতে বাধা প্রাপ্ত হয়েছিল রামপুরহাট পৌরসভা।
-দিব্যেন্দু গোস্বামি, বীরভূম প্রতিনিধি