ভিওসি রিপোর্ট

আসামের বিশ্বনাথ জেলা পুলিশ ভিসা নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে ১৭ বাংলাদেশী নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে। বিশ্বনাথ জেলার জিনজিয়া থানার অন্তর্গত দুর্গম ও নদীমাতৃক এলাকা বাঘমারি থেকে শনিবার পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।১৭ বাংলাদেশী নাগরিককে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে শনিবার আরও দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেফতারকৃত দুজনের নাম সামছুল হক ও জেহেরুল হক, দুজনেই বাঘমারীর বাসিন্দা। পুলিশ সুপার নবীন সিং জানাযন, বাংলাদেশি ওই ১৭ নাগরিক পর্যটক ভিসা ব্যবহার করে ভারতে এসে তারা ধর্মীয় শিক্ষা ও অন্যান্য ধর্মীয় কর্মকাণ্ড লিপ্ত হয়েছিল।

নবীন সিং জানান“আমরা তথ্য পেয়েছি যে বিশ্বনাথ জেলার জিনজিয়া থানার অন্তর্গত বাগমারি এলাকায় ১৭ জন বাংলাদেশী গত তিন চার দিন ধরে অবস্থান করছিলেন এবং ওই এলাকায় ধর্মীয় সভা ও ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছেন,”

সিং আরও বলেছেন, “তারা একটি নির্দিষ্ট সেক্টরের সদস্য এবং তাদের নেতা (ধর্মগুরু)ও এই দলের অংশ। আমরা প্রথমে তাদের আটক করে থানায় যাচাই করি এবং দেখতে পাই যে তারা আগস্ট থেকে বিভিন্ন তারিখে কোচবিহার হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে”।

পুলিশের মতে অভিযুক্তরা আসামের দক্ষিণ সালমারা জেলায় গিয়েছিলেন এবং পুলিশ তাদের নেতাকে ধর্মীয় সভা আয়োজন না করার জন্য সতর্ক করেছিল। অভিযুক্তরা পুলিশকে জানায় যে তারা কোনো ধর্মীয় সভা করবে না এবং আজমির শরীফে যাবে।

“কিন্তু তারা আবার আসামে প্রবেশ করে এবং বিশ্বনাথ জেলার বাঘমারি এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিল যেটি একটি অত্যন্ত দুর্গম ও নদীমাতৃক এলাকা। তারা পর্যটন ভিসায় এসে ধর্মীয় শিক্ষা ও অন্যান্য ধর্মীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে যা ভারতীয় ভিসার নিয়ম লঙ্ঘন এবং সেই কারণে, তাদেরকে ফরেনার্স অ্যাক্টের অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাংলাদেশী গ্রুপটির নেতৃত্বে ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল। এই দলটি আগস্টের শেষ সপ্তাহে দক্ষিণ সালমারায় অনুরূপ ধর্মীয় সভা এবং অন্যান্য ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে।

ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল আলম নামে এক মৌলভী। বাকিরা তার অনুসারী বলে জানা গেছে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেনঃ সৈয়দ আশরাফুল আলম, মোঃ গোলাম আজম, আলম তালুকদার, মোহাম্মদ মাসুদ রানা, মোঃ আব্দুল হাকিম, হাফিজুর রহমান, মোঃ সবুজ সরকার, মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ, সোহাগ চৌধুরী, মোঃ আনোয়ার হোসেন, মান্নান আলি, মোঃ মকবুল হোসেন মোঃ শাহ আলম সরকার, মোহাম্মদ বাদশা সরকার, .মোঃ গোলাম রাব্বানী ও মোহাম্মদ হারুল। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা এরা।

আসামে গ্রেফতারকৃত ওই ১৭ বাংলাদেশী নাগরিককে গ্রেফারের ঘটনা, তারা এখন কি অবস্থায় আছে বিস্তারিত খোঁজ খবর নেয়ার জন্য আসামে নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার ড. শাহ মো: তানভীর মনসুর এর সাথে যোগা যোগ করা হলে তিনি সংবাদ-কে জানান, ‘এ ব্যাপারে আমি   কিছুই জানিনা-ামার কাছে কোন থথ্য নেই, এখনি আপনার কাছ থেকে শুনলাম”। ১৭ বাংলাদেশী নাগরিককে তিনদিন হলো গ্রেফতার করেছে আসাম পুলিশ, কিন্তু বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে  সহকারী হাইকমিশনার তানভির মনসুর আটককৃত বাংলাদেশীদের পাশে দাড়ানো, প্রকৃত ঘটনা জানা প্রয়োজন থাকলেও তিনি এই বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে তিনি আমাকে বললেনন ‘আমি না জানলে আপনাকে কি করে তথ্য জানাবো?’

এর আগে, ২৮ আগস্ট, শনিবার আসামের দক্ষিণ সালমারা মানকাচার জেলায় অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করার জন্য সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী (বিএসএফ) পাঁচ বাংলাদেশী নাগরিককে আটক করে।এই লোকেরা অসাবধানতাবশত আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করেছিল এবং মানবিক কারণে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করে।

এর আগে ১৮ আগস্ট একই জেলা থেকে একই ধরনের একটি ঘটনার খবর, অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের দায়ে দুই বাংলাদেশিকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডদেশ দিয়েছেন দক্ষিণ সালমারা মানকাচর জেলার জেলা ও দায়রা আদালত। এ ছাড়াও আদালত প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে। জরিমানা অনাদায়ে উভয়কে আরও ছয়মাসের কারাভোগ করতে হবে। দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির নাম আবদুল হাই ও নিরঞ্জন ঘোষ।

জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর বিশ্বজিৎ মহন্ত বলেন, “জেলা ও দায়রা জজ আদালত আব্দুল হাই ও নিরঞ্জন ঘোষ নামে দুই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন এবং উভয়েই বাংলাদেশের বাসিন্দা এবং আদালত তাদের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।”