ভিওসি ডেক্স নিউজ    কলকাতা, ১৫ আগস্ট ২০২৩, মঙ্গলবার : বিশ্বের অবিসংবাদিত নেতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে। বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন চত্বরে  সকাল ৮ টায়  শোক দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। দিবসটি উপলক্ষে  উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত উত্তোলন করেন উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস।  এর পরে  “মুজিব চিরঞ্জীব” মঞ্চে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন এবং কলকাতাস্থ বেকার গভ: হোস্টেল-এর বঙ্গবন্ধু স্মৃতিবেষ্টিত কক্ষে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্যে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। দুপুরে  এতিম খানার দুস্থ ও অনাথ শিশুদের জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আগামিকাল ১৬ আগস্ট বুধবার থাকবে বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন কলকাতা বিশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী।উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কলকাতা ইসলামিয়া কলেজের (বর্তমানে মৌলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র হিসেবে ১৯৪৫-৪৬ সালে ৮, স্মিথ লেনের বেকার গভর্ণমেন্ট হোস্টেলের ২৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৪৬ সালে বঙ্গবন্ধু ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৪৭ সালে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাসে ব্যাচেলর ডিগ্রী অর্জন করেন। বিকেলে ‘বাংলাদেশ গ্যালারী’ তে এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভার স্পীকার শ্রী বিমান ব্যানার্জি। ালোচানা সুরুর আগে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয় এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়।এ ছাড়া সভায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। যথাক্রমে মহামাণ্য রাষ্ট্রপতির বানী পাঠ করেন কাউন্সেলর (শিক্ষা ও ক্রীড়া) রিয়াজুল ইসলাম,  প্রধানমন্ত্রীর বানী পাঠ করেন কাউন্সেলর (কন্স্যুলার) এএসএম আলমাস হোসেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন প্রথম সচিব (বাণ্যিজিক), মো: শামসুল আরিফ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন শেখ মারেফাত তারিকুল ইসলাম, দ্বিতীয় সচিব (রাজনৈতিক)। আলোচনা সভায় বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননাপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকার বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো ক্যারিশমেটিক ব্যক্তিত্ব খুব কম দেখা যায়, যার ডাকে মানুষ অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিতে রাজি। আর তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারীর যে উন্নয়ন হচ্ছে সে উদাহরণ দুনিয়ায় বিরলবিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলকাতা প্রেসক্লাবের প্রেসিডেন্ট  স্নেহাশিষ সুর বলেন, শেখ মুজিব শুধু ভারতীয় উপমহাদেশ নয় পুরো এশিয়ার মানচিত্র বদলে দিয়েছেন। অনুষ্ঠানের সভাপতি  উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস বলেন, শুভ-অশুভর যুদ্ধ নিরন্তর চলমান। যা কিছু শুভ বঙ্গবন্ধু ছিলেন তার প্রতীক। তাই অশুভ শক্তি তাঁকে হত্যা করেছিলো। কিন্তু শুভর জয় সুনিশ্চিত এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের বর্তমান ঈর্ষণীয় সাফল্য তারই প্রমাণ। পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভার মাননীয় স্পীকার  বিমান ব্যানার্জি বলেন, ব্যক্তি মুজিবকে হত্যা করা গেলেও তার চেতনাকে হত্যা করা সম্ভব নয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের ফেরাতে শেখ হাসিনার সরকারের প্রচেষ্টা সফল হবে। অনুষ্ঠানের সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন তুষিতা চাকমা, কাউন্সেলর (রাজনৈতিক)। সবশেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের সকল সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।