বিজেপি বলছে ‘ভোট লুট করে বাংলার গনতন্ত্রকে বিপন্ন করছে তৃণমূল’

ভিওসি প্রতিবেদন

রাজ্যের ৪ উপ নির্বাচন কেন্দ্রে তৃণমূলের জয় জয়কার। উপনির্বাচনের ফলাফল নিয়ে উচ্ছ্বাসিত তৃণমূল শিবির। বিজেপির দুটি আসনও আজ হাতছাড়া হয়ে যায়। ৩০ অক্টোবর চারটি আসনে বিধানসভা উপ-নির্বাচন হয়েছে। মঙ্গলবার ভোটগণনার পর চারটি আসনেই ৭৬ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে তৃণমূল প্রর্থীরা জয়ী হয়েছে। এই আসনগুলো হলো দিনহাটা-শান্তিপুর-গোসাবা ও খড়দা। চারে চার তৃণমূলের এই জয়ের পর মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, ‘এই জয় মানুষের জয়’।

এর আগে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়া দিনহাটা-শান্তিপুর হাতছাড়া হলো বিজেপির। দিনহাটায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামানিকের বুথেও বিজেপির হার। উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটে দিনহাটা-শান্তিপুর-গোসাবা-খড়দায় জয়ী তৃণমূল প্রথীরা। দিনহাটায় ১ লক্ষ ৬৪ হাজর ৮৮টি ভোটে জয়ী হয়েছেন উদয়ন গুহ। খড়দায় ৯৩ হাজার ৮৩২ ভোটে জয়ী হয়েছেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। গোসাবায় ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৫১ ভোটে জয়ী সুব্রত মণ্ডল। শান্তিপুরে ৬৪ হাজার ৬৭৫ ভোটে জয়ী হলেন ব্রজকিশোর গোস্বামী। এমনকি শান্তিপুর বাদে বাকি তিন কেন্দ্র, দিনহাটা- গোসাবা-খড়দহে জামানত বাজেয়াপ্ত হলো বিজেপি প্রার্থীদের।

বিধানসভা উপনির্বাচনে চার কেন্দ্রে  জয়ী প্রার্থীদের ট্যুইট করে শুভেচ্ছা জানালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, এটা সাধারণ মানুষের জয়। বাংলা সব সময় উন্নয়ন এবং একতাকেই বেছে নেয়। কৎত্সা এবং ঘৃণার রাজনীতিকে নয়। সাধারণ মানুষের আশীর্বাদ পেয়ে আমরা বাংলাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।

উপনির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি ড. সুকান্ত মজুমদার বলেন, “দিনহাটার যে ফলাফল, তা বলে দিচ্ছে, ওখানে কী হয়েছে। একটা উপনির্বাচনে ১ লক্ষ ৪০ হাজার ভোটে এগিয়ে। সবাই বোঝে, কেউ বোকা নয়। আমরা আগেও বলেছিলাম, যে ধরনের বাতাবরণে ওই চার কেন্দ্রে ভোট হয়ছে বা  ভোট হচ্ছে শুধু সেখানে নয়, গোটা রাজ্যেই এই চিত্র ফুটে ওঠেছে। এই ভাবে ভোট ডাকাতি করে জেতাটা কৃতিত্বের নয়। বাংলায় ভোটের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নেই। আমরা আগেও দেখেছি উপনির্বাচনে সন্ত্রাস হয়েছে। তৃণমূল গুন্ডাদের সন্ত্রাস এমন চলছে, যেখানে ভোট নেই সেখানেও অনেক বিজেপি কর্মীরা  এখন পর্যন্ত ঘরে ঢুকতে পারছে না। বাংলার গণতন্ত্র বিপন্ন।

বিধানসভা ভোটের পর থেকে ভাঙন অব্যাহত গেরুয়াশিবিরে। রাজ্যের চার কেন্দ্রে উপনির্বাচনেও এবার মুখ থুবড়ে পড়লো। কেন এমন ভরাডুবি? এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে আক্রান্ত বিরোধী কর্মীরা। অনেক বিজেপি কর্মী এখনও ঘরছাড়া। দিনহাটায় কি ভাবে ভোটে লড়েছি, সবাই দেখেছে। আমাদের নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এই ব্যবধান কি মানুষের মতের প্রতিফলন? কী আবহে ভোট হয়েছে, সবাই দেখেছে’। সঙ্গে তিনি যোগ করলেন, ‘ আজ নতুন রেকর্ড গড়ল তৃণমূল। এই পরাজয় মেনে নিচ্ছি তবে আগামীদিনে পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্রপ্রিয়, রাজনৈতিক সচেতন মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন, এই আশা রাখি’।

পশ্চিবঙ্গে নির্বাচন তথা গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, ‘নির্বাচনের আগে বিজেপির পক্ষে হাওয়া ছিল। দিনহাটা, গোসাবা ব্যাপক সন্ত্রাস হয়েছে।লুট হয়েছে খড়দহ কেন্দ্রেও ।  আমরা  পরিস্থিতিতে আমরা ভোট চাইনি’। ভোট করেছে তৃণমূল আর নির্বাচন কমিশন। শাসকদলকে দিলীপের কটাক্ষ, ‘তৃণমূল একশো শতাংশ ভোট পেলেও অবাক হব না। সব ভোট লুঠে নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে  তৃণমূলের। দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, ভোটের ফল বেরোতে না বেরোতেই তৃণমূলীরা বিজেপির দলীয় দপ্তর গুলো পুনর্দখল করতে শুরু করে দেয় মমতার পুলিশের সামনেই।

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিচক্ষনতায় তৃণমূল কংগ্রেস একের পর এক নির্বাচনে প্রাথীরা জিততে সক্ষম হয়েছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সম্মানিত করবেন  রাজ্যের শাসক দলের বিধায়করা। আগামী  কালিপূজোর বন্ধের পর বিধানসভার অধিবেশ শুরু হলে্ই নেত্রীকে  বিশেষভাবে সম্মানিত করবেন রাজ্যের শাসক দলের বিধায়করা।