এম এ রহিম বাংলাদেশ থেকে
প্রতিবছর শীতের সময়ে ডিসেম্বর বা জানুয়ারী মাসে ঢাকার লাগোয়া টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব ইজতেমা। আগামি শুক্রবার আমবয়াতের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের ইজতেমা শুরু হবে ।৷ দেশ বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লীর অংশগ্রহণে আল্লাহ আকবার ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে টঙ্গি এলাকা। মুসলিম সম্প্রদায়ের পবিত্র হজ্বেরপর বলা হয় বিশ্বের তাবলীগ জামাতের বৃহত্তম গণজমায়েত হয় এই বিশ্ব ইজতেমায়।
অর্ধশত ব ছর আগে থেকেই বাংলাদেশে হয়ে আসছে বিশ্বের সবচেয়ে বড়গণ জমায়েত বিশ্বইজতেমা। ইতিহাসের সাক্ষ্যমতে ১৯২৬সালে ভারতের উত্তর প্রদেশে হযরত মাওলানা ইলিয়াস হোসেন রহমাহতুল্লাহি অলাহি তাবলীগ জামাত প্রসারে আন্দোলন শুরু করে। পরে উপমহাদেশ ছাড়িয়ে অন্য উপমহাদেশে তাবলীগের প্রসার লাভ করে। ১৯৪৭সালে ভারত বিভক্তের পর তাবলীগ জামাত পশ্চিম পাকিস্থান পূর্বপাকিস্থান ও ভারতে এই তিনটি স্থানে তাবলীগের গোড়াপত্তন শুরু হয়। বাংলাদেশে ১৯৪০দশকের শেষদিকে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে প্রথমে এর যাত্রাশুরু হয়। তখন নদীপথে মুসল্লীরা হজ্বে যেতে এখানে গণজমায়েত হতেন। এখান থেকে শুরু হয় অঞ্চলিক ইজতেমা। ভারতের ইলিয়াস মাওলানার ছেলে মোঃ ইউছুপ তাবলীগ জামাতের মাধ্যমে ইসলামের বিভিন্ন এলাকায় দাওয়াত শুরু করেন। ১৯৪৬সালে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে শুরু হয় গণজমায়েত। পরে নারানগজ্ঞের সিদ্ধিরগজ্ঞে ১৯৬৫সালে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে দেশিবিদেশী জামাত সুরাসদস্য গঠিত হয়। পরে ১৯৬৬সালে ইজতেমা হয় টঙ্গির মুনসুর জুটমিলের কাছে। পরের বছর টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তুরাগতীরে ৪৮০বিঘা জমি নির্ধারণ করে দেন বিশ্ব ইজতেমার জন্য। আজ এই বিশ্বইজতেমা ময়দানে বসছে বিশ্বের লাখ লাখ মেহমান। মানব সাগরে রুপ নেয় এই পবিত্র ইজতেমাস্থল। তানলীগ জামাত ও সরকারের সার্বিক ব্যাবস্থাপনায় ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত হয় তাবলীগের গণজমায়েত।বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তাবলীগ জামাতের ৫৭তম বৃহৎ গনজামায়েত টঙ্গীতে অনুষ্ঠিতব্য দুইপর্বের বিশ্ব ইজতেমায় যোগদিতে স্থলপথ আাকাশপথ ও রেলপথে ঝাঁকে ঝাঁকে আসছেন মুসল্লীরা। প্রথম পর্ব শুরু হচ্ছে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার।শেষ হবে ৪ ফেব্রয়ারী।
আখেরাতের শান্তি কামনায় স্থলবন্দরগুলো দিয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশে আসছে শহস্রাধিক বিদেশী মেহমান। সীমান্ত এলাকায় বিদেশী মেহমানদের সেবা দিচ্ছেন ঢাকা থেকে আগত তাবলীগ জামাতের সদস্যরা।
প্রতিবছরের ন্যায় এবার ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে আসছেন মুসল্লীরা। সীমান্তের বিভিন্ন মসজিদ৷ থেকে আগত তবলীগ জামাতের মুসল্লীদের আপ্যায়নসহ বাসযোগে টঙ্গী ও কাকরাইলে পাঠাতে সাহায্য করছেন তাবলীগ জামাতের সদস্যরা। আপ্যায়ণ সহ বাংলাদেশে সার্বিক ব্যাবস্থাপনায় খুশি বিদেশী মেহমানরা ৷ কলিকাতা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডক্টর মেহেদী হোসেন বলেন বিশ্বে ৩টি বিশ্ব এজতেমার মধ্যে বাংলাদেশের টঙ্গির তুরাগতীরের তাবলীগ জামাতের তাৎপর্য অনেক। এখান থেকে বিশ্বতাবলীগের সারা বছরের কর্মপরিকল্পনা চুড়ান্ত করা হয়। আল্লাহ ও রাসুলের বিধান প্রতিপালনে বিশ্বব্যাপি দাওয়াতের কাজ করা হয়। সবাইকে আল্লাহর পথে আসার আহবান জানান তিনি।
প্রথম পর্বে ২ফেব্রয়ারী থেকে চলবে ৪ফেব্আয়ারী। জোবায়ের র্পন্থি মুসল্লিরা অংশ গ্রহণ করবেন। চার দিন বিরতির পর ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা শুরু হবে। এ পর্বে অংশগ্রহণ করবেন সাদপন্থি মুসল্লিগণ।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ওসি জানান প্রতিদিন আসছে বিদেশী মেহমান। তবে গত ৩ দিনে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের মুসল্লীদের আগমণ বেড়েছে বলে জানান তিনি। মুসল্লীদের দ্রুতসেবা দিচ্ছেন ইমিগ্রেশন পুলিশ। বাংলাদেশ পুলিশের এই সেবাদান ইজতেমায় আগত অতিথিদর মুগ্ধ করেছে।