ভিওসি নিউজ

নতুন দিল্লি, ২৮ আগস্ট, ২০২১ :  দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ভারতীয় উপকূল রক্ষী বাহিনীর জাহাজ ‘বিগ্রহ’ জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী  রাজনাথ সিং আজ চেন্নাইয়ে সম্পূর্ণ আত্মনির্ভর ভারত গঠনের লক্ষ্যে এই প্রয়াসকে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন,  সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি নবনির্মিত এই জাহাজটির নকশা থেকে নির্মাণ সব কিছুতেই অভিনবত্ব রয়েছে। তিনি বলেন, ভারতীয় প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের ইতিহাসে এই প্রথম একটি বা দুটি জাহাজ নির্মাণের ক্ষেত্রে নয়, বরং একসঙ্গে ৭টি জাহাজ তৈরির বরাত একটি বেসরকারী সংস্থাকে দেওয়া হয়েছিল। এর থেকে আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ২০১৫তে এই জাহাজগুলি নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষরের ৭ বছরের মধ্যে  জাহাজগুলি নির্দিষ্ট প্রতিরক্ষা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়ার পরে ৭টি জাহাজেরই এক সঙ্গে উদ্বোধন করা হয়েছে।

প্রতিবেশী দেশগুলির সাহায্যের ক্ষেত্রেও ভারতীয় উপকূল রক্ষী বাহিনীর ভূমিকার কথা স্মরণ করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, তৈলবাহী বা  পণ্যবাহী জাহাজ য়াই হোক তাদের বিপদ  থেকে রক্ষা করা তথা সঙ্কটগ্রস্থ জাহাজের নাবিক ও কর্মীদের প্রাণরক্ষাসহ প্রভৃতি ক্ষেত্রে উপকূল রক্ষী বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ।  সম্প্রতি মরিসাস উপকূলের কাছে একটি তৈলবাহী জাহাজ থেকে সমুদ্রে তেল ছড়িয়ে পড়া রুখতে উপকূল রক্ষী বাহিনী যে পদক্ষেপ নেয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী তার প্রশংসা করেন।

এ ছাড়াও প্রতিরক্ষামন্ত্রী উপকুল রক্ষা বাহিনীর নতুন জাহাজ বিগ্রহ জলে ভাসানোর এই  উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে  ‘সাগর’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য  উপকূল রক্ষী বাহিনীর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

উল্লেখ্য, উপকূল রক্ষী বাহিনীর এই জাহাজটি বিশাখাপত্তনম থেকে কাজকর্ম পরিচালনা করবে এবং বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কম্যান্ডারের প্রশাসনিক ক্ষমতাধীনে থাকবে। মেসার্স লার্সেন অ্যান্ড ট্যুব্রো শিপ ব্লিডিং লিমিটেড কর্তৃক সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে ৯৮ মিটার দীর্ঘ বাহিনীর এই বিগ্রহ জাহাজটি তৈরি করেছে। এই জাহাজে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন র‍্যাডার, দিক নির্দেশক এবং যোগাযোগ স্থাপনের উপযোগী আধুনিক সাজ সরঞ্জাম সহ সেন্সর রয়েছে। এই জাহাজটি প্রায় ২২০০ টন পণ্য পরিবহণে সক্ষম। এমনকি জাহাজটিতে দুটি ৯১০০ কিলোওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ডিজেল চালিত ইঞ্জিন রয়েছে। এর ফলে জাহাজটির সর্বোচ্চ গতিবেগ দাঁড়াবে ঘন্টায় ২৬ নট্।  উপকূল রক্ষী বাহিনীর এই জাহাজটিকে পূর্বাঞ্চলীয় কম্যান্ডে নজরদারী ও অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা হবে। ভারতের নৌ বাণিজ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রেও এই জাহাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বাহিনীতে এই জাহাজটি সামিল হওয়ার ফলে উপকূল রক্ষীর মোট জাহাজের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৫৭ এবং এয়ার ক্রাফটও রয়েছে ৬৬টি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বরাত দিয়ে পিআইবি এই তথ্য জানায়।