নিজস্ব রিপোর্ট

প্রয়াত হয়েছেন বিশি্ষ্ট ‍সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ। রবিবার রাত ১১টা ২৫ মিনিট নাগাদ শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। দীর্ঘ সময় ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল তাঁর। এছাড়াও  মাল্টি অর্গান ফেলিওরও হ্রাস করেছিল তাঁকে। মূত্রথলীতেও দেখা দিয়েছিল সংক্রমণ। এছাড়া কিডনি এবং লিভারেও বেশ কিছু সমস্যা ছিল বলে জানান চিকিৎসকরা। শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো যায়নি তাঁকে।

প্রবীন সাহিত্যিক বুদগ্ধদেব গুহ-র প্রয়াণে সাহিত্য জগতে শোকের ছায়া নেমে আসে। । গত ২৪ এপ্রিল এপ্রিল  করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রবীণ সাহিত্যিক। কিন্তু করোনা জয় করে বাড়ি ফিরলেও বয়সজনিত নানা সমস্যার দেখা দেয়। ফলে ৪ আগস্ট ফের তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।   চার সদস্য বিশিষ্ট চিকিৎসা বোর্ডের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। কড়া পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছিল বুদ্ধদেব গুহ-কে।। তবে চিকিৎসায় তেমন সাড়া দিচ্ছিলেন না তিনি। পরে তাঁকে স্থানান্তর করা হয়েছিল আইসিইউতে। রবিবার রাতে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।

সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়েছিল চার্টার্ড অ্যাউন্ট্যান্ট হিসেবে। পরে লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ হন তিনি। তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘জঙ্গলমহল’। এছাড়া ‘মাধুকরী’ তাঁর অন্যতম সেরা সৃষ্টি। ‘ঋজুদা’র কথাও সবাই মনে রাখবেন। যা সকল প্রজন্মের কিশোরদের কাছেই সমাদৃত হয়েছে। এছাড়া বাবলি’, ‘কোজাগর’, ‘হলুদ বসন্ত’, ‘একটু উষ্ণতার জন্য’, ‘কুমুদিনী’, ‘খেলা যখন’, ‘চানঘরে গান’ সাহিত্যজগতে চিরস্মরণীয়। প্রকৃতির সৌন্দর্য ও জঙ্গলের বর্ণনা  বারবার তাঁর লেখায় স্থান  পেয়েছে। বুদ্ধদেবের অসংখ্য গল্প, উপন্যাস বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে।

বিশিষ্ট সাহিত্যিক  বুদ্ধদেব গুহের প্রয়াণে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক ট্যুইটে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “শ্রী বুদ্ধদেব গুহের সাহিত্যকর্মে বহুমুখী প্রতিভার প্রতিফলন ঘটেছে। তাঁর লেখনীতে পরিবেশের প্রতি সংবেদশীলতা বারবার প্রকট হয়ে উঠেছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম বিশেষ করে, তরুণরা তাঁর সাহিত্যকর্মের স্বাদ উপভোগ করেছেন। তাঁর প্রয়াণ সাহিত্য জগতে বড় ক্ষতি। তাঁর পরিবার এবং অনুগামীদের প্রতি সমবেদনা। ওম শান্তি”। ১৯৭৭ সালে আনন্দ পুরস্কারেও সম্মানিত হয়েছিলেন তিনি। বিশিষ্ট সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহর প্রয়াণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোক প্রকাশ করে  জানান, আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তাঁর প্রয়াণে সাহিত্য জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি বুদ্ধদেব গুহর আত্মীয় পরিজন এবং অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।