নিজস্ব বার্তাপরিবেশক
কলকাতা : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন, কলকাতা-র উদ্যেগে দুই দিন ব্যাপী (১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে।
সকালে কলকাতা উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য “মুজিব চিরঞ্জীব-এ পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এছাড়া কলকাতায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সোনালী ব্যাংক লিমিটেড-এর কর্মকর্তা/কর্মচারিবৃন্দও বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী-র বাণী পাঠ করা হয়। যথাক্রমে উপ-হাইকমিশনের কাউন্সিলর (শিক্ষা ও ক্রীড়া) রিয়াজুল ইসলাম রাষ্ট্রপতি-র, কাউন্সিলর (কনস্যুলার) এএসএম আলমাস হোসেন প্রধানমন্ত্রীর, কাউন্সিলর (রাজনৈতিক) তুষিতা চাকমা পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও দ্বিতীয় সচিব (রাজনৈতিক) শেখ মারেফাত তারিকুল ইসলাম পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী-র প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন। এরপর অনুষ্ঠানের সভাপতি উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস-এর বক্তব্যের মাধ্যমে সকালের প্রথমপবের্র অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
এদিন দ্বিতীয় ধাপে বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের কৃষি ও পরিষদ বিষয়ক মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন পদ্মশ্রী পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ মাসুম আখতার,রা কাউন্সিলর (কনস্যুলার) এএসএম আলমাস হোসেন, দূতাবাসের হেড অব চ্যান্সের সিকদার আশরাফুর রহমান, প্রেস সচিব রঞ্জন সেন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দ্বিতীয় সচিব (রাজনৈতিক) শেখ মারেফাত তারিকুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির ভাষণে মন্ত্রী শোভনদেব চট্রোপাধ্যায় ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক।
উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস সমাপনী বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার স্থপতি, বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য সহায়তার জন্য ভারতের, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। বাংলাদেশ-ভারতের গভীর বন্ধুত্বের প্রসঙ্গে তিনি আশা ব্যক্ত করে বলেন, উন্নয়ন যাত্রায় বাংলাদেশ এবং ভারত একসঙ্গে এগিয়ে যাবে। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন দ্বিতীয় সচিব (রাজনৈতিক) শেখ মারেফাত তারিকুল ইসলাম।
কলকাতায় এনআরবি ওয়ার্ল্ডের অনবদ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের দুই দিনব্যাপী বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান। রোববার সন্ধ্যায় শেষ দিনের অনুষ্ঠানে গানে-কবিতায় মেতে ওঠে দূতাবাস প্রাঙ্গনের বঙ্গবন্ধু মঞ্চ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, একাত্তরের ৩০ লাখ শহীদ, মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা, ভারতীয় মিত্রবাহিনী এবং কলকাতার রণাঙ্গনের সাংবাদিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন এনআরবি ওয়ার্ল্ডের দফতর সম্পাদক সাহানারা খাতুন। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা কবি’sতা আবৃত্তি করেন। এরপর ‘ও আমার দেশের মাটি, তোমার পরে ঠেকাই মাথা’ (রবীন্দ্র সঙ্গীত) পরিবেশন করেন সঙ্গীত শিল্পী পূর্ণিমা সাউ। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা কবি আনিসুল হকের কবিতা ‘৩২ নম্বর মেঘের ওপারে’ আবৃত্তি করেন শিল্পী শিরিন সুলতানা। সঙ্গীত শিল্পী মৌসুমী দাসের পরিবেশনায় শেষ হয় দূতাবাসের দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। তিনি পরিবেশন করেন ‘সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি, ও আমার বাংলাদেশ প্রিয় জন্মভূমি। অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেন এনআরবি ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ফোরামের সম্পাদক ওমর আলী।