এম এ রহিম বাংলাদেশ থেকে
আর এক বছর অপেক্ষা। তার পরই স্বপ্নের পদ্নাসেতু দিয়ে চলু হতে যাচ্ছে রেল। রেল সংযোজন হলে পাল্টে যাবে বাংলাদেশে ভ্রমণ সুবিধার আভাবনীয় চিত্রপট। যোগাযোগ ও ব্যাবসা বানিজ্যে বয়ে আনবে অনবিল সমৃদ্ধ। এছাড়াও রেল সুবিধা চালু হওয়ার পরই পদ্মাসেতুর যোগসূত্রে শুরু হবে ভারতের কলকাতার সাথে ‘নবমৈত্রী’ রেল যাত্রা। তৈরী হবে নতুন যোগযাত্রা। এমনটাই বলেছেন বাংলাদেশের রেল সচিব ড. হুমায়ূন রশিদ।
পদ্মা সেতু একটি আকাঙ্খা, একটি স্বপ্নের নাম। বিশ্ব দূয়ারে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াবার সাহস। পদ্মা সেতু দেশের গর্ব। পদ্মা সেতু সমৃদ্ধ করছে দেশের অর্থনীতিকে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের মুখের হাসি।সেতুর কল্যাণে বদলে যাচ্ছে মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর জেলার প্রতিদিনের চিত্র। স্বচ্ছলতার পাশি, শক্ত করেছে এসব এলাকার মানুষের পায়ের তলার মাটি। প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে শিল্প, কল কারাখানা, নতুন নতুন অভিজাত বাণিজ্যিক ভবন, শপিংমল।
পদ্মা সেতু থেকে দেশের অর্জন চমকে দেওয়ার মতো। দেখতে দেখতে এক বছর পার করল পদ্মাসেতু। স্বপ্ন এখন বাস্তব। আনন্দে ভাসছে পুরো দেশ, সবচেয়ে বেশী উপকারভোগী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ।
এক বছর আগেও রাজধানী ঢাকায় আসতে ঘন্টার পর ঘন্টা নদীর ঘাটে অপেক্ষা করতে হতো লঞ্চ কিংবা ফেরির জন্য। দুর্ভোগের যেন শেষ ছিলনা। ভোগান্তি আর সময়ক্ষেপণ করে একরাশ ক্লান্তি নিয়ে ফিরতে হতো এ পথের অভ্যাগত যাত্রীদের। অপচয় হতো সময়ের অর্থ ও টাকার। কিন্তু এখন বরিশাল থেকে রাজধাণী ঢাকা আসতে ৮/৯ ঘন্টার পরিবর্তে সময় লাগে মাত্র তিন ঘন্টা। দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ তাদের উৎপাদিত সবজি, মাছ বিক্রয়ের জন্য নিমিষেই ঢাকায় নিয়ে আসছে ২১টি জেলার মানুষ। তার উপরে চলবে রেল, ভাবা যায়? আগামী বছরের জুন নাগাদ পদ্মাসেতু র উপরে রেল প্রকল্পের কাজ শেষ হবে, তার পরই চলবে ভাঙ্গা হয়ে যশোর -বেনাপোল রেল সার্ভিস। ২০২৪-র সেপ্টম্বরের শেষের দিকে সরসরি রেল চালুর কথা জানান রেল সচিব ড হুমায়ুন কবির।বাংলাদেশ ও ভারতের ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য এটা বিশাল খুশির খবরই বটে।
বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ভরতও বাংদেশের সাথে পদ্মাসেতু দিয়ে রেল যোগাযোগের জন্য সম্ভাব্য সবরকম সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছেন। ইতোমধ্যে বেনাপোল স্টেশন এলাকা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। যাত্রীসেবা ও পণ্য আমদানি রফতানিতে সবধরণের সুযোগ সুবিধার গুরুত্ব দিয়ে একাধিক প্রকল্প চলমান রয়েছে বলে জানান রেল সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশের মধ্যে চলাচলকারী যাত্রী সেবা বৃদ্ধিসহ চোরাচালান রোধ ও পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকা বেনাপোল টু ভারতের কলিকাতায় মধ্যে সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষে শুক্রবার সকাল ১১টার সময় বেনাপোল রেলস্টেশন এলাকা পরিদর্শন করেন রেল মন্ত্রনালয়ের সচিব ড: হুনায়ুন কবির। স্টেশনে পৌছালে তাকে ফুলদিয়ে অভ্যার্থনা জানানো হয়। পরে তিনি রেলস্টেশনের বিভিন্ন এলাকা পারিদর্শন করেন। কাস্টম ও ইমিগ্রেশনের বিভিন্ন বিষয় ও রেল লাইন সম্প্রসারণ ্এবং ডক ইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণের কথা জানান তিনি। দুপুরে রেলস্টেশন ইমিগ্রেশন অভান্তরে প্রশাসন ও ব্যবসায়িদের সাথে বৈঠকে রেলের অব্যাবস্থাপনা ও বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবী জানানো হয় সচিবের কাছে। এ সময় যশোর জেলা প্রশাসক মোঃ তমিজ উদ্দিন খান, রেল মন্ত্রনালয়ের সচিবের একান্ত সচিব (উপসচিব) মোহাম্মদ মাহবুবুল হক, রাজশাহী রেঞ্জের চিফ ইজ্ঞিনিয়ার মোহাম্মদ আসাদুজামান, বেনাপোল কাস্টমস ডেপুটি কমিশনার তানভির হোসেন ,যশোর ৪৯ বিজিবি উপ অধিনায়ক মেজর সামিমুজ্জোহা সেলিম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ন চন্দ্র পাল, সহকারি কমিশনার (ল্যান্ড) ফারহানা ইসলাম, ওসি কামাল হোসেন ভুইয়া ও আহসান হাবিব। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিএন্ডএফ নেতা মফিজুর রহমান সজন।
আমদানি রফতানির সাথে সংশ্লিষ্ট মোঃ মেহেরুল্লাহ ও মনির হোসেন বলেন পদ্মাসেতু দিয়ে রেলচালু হলে কমবে সময়, সহজ হবে যোগাযোগ, বাড়বে ব্যাবসা ও ভ্রমণ। তারা স্টেশন এলাকার জায়গা সম্প্রসারণ ও শেড ইয়ার্ড নির্মাণসহ রাস্তা ২ লেন করার দাবী জানিয়েছেন সচিবের কাছে। সচিব এগুলো নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় ও দপ্তরের সাথে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।
রেল সচিব ড হুমায়ুন কবির রেলের বিভিন্ন বিষয়ে খোজ খবর সহ পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকা বেনাপোল রেল চলাচলে সরেজমিন পরিদর্শন করে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান বেনাপোল রেল স্টেশন মাস্টার সাইদুজামান সহিদ ।