ভিওসি প্রতিবেদন
রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যসরকারের সাবেক খাদ্যমন্ত্রী বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। প্রায় ১৯ ঘন্টা টানা জেরা, জিজ্ঞাসাবাদ, তল্লাশি শেষে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাকে তার স্লতলেকের বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে ইডি। এর আগে এদিন মন্ত্রীর একাধিক বাড়িতে দিনভর তল্লাশি চালায় ইডি।
টানা তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর সল্টলেকের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে রাত ৩টার দিকে থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ইডি দপ্তর অর্থাৎ সিজিও কমপ্লেক্সে। গ্রেপ্তারির পর সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হলেন।
উল্লেখ্য,রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার সকালেই রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর একাধিক বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, ইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাঁর সল্টলেকের বাড়ির বাইরে মোতায়েন ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ির সামনে বাড়ানো হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা। মন্ত্রীর বাড়িতে ইডির হানার খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসে দলের বহু কর্মী ও সমর্থক -রা। ভিড় সামলানোর জন্য তাৎক্ষণিকভাবে মন্ত্রীর বাড়ির সামনে ব্যারিকেড বসানো হয়েছিল । রাতে পুলিশকে এলাকার ভিড় সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলেও জানা যায়। বৃহস্পতিবারের সকাল ৬টা থেকে টানা তল্লাশি, জিজ্ঞাসাবাদের পর রাত ৩টার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। সল্টলেকের বাড়ি থেকে ইডি দপ্তর নিয়ে যাওয়ার সময় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হলাম আমি, এটা শুধু বলে গেলাম। আমি বজেপিকে ধন্যবাদ জানাই, তারা খুব ভাল কাজ করেছে।
রাজ্যে ‘ রেশন বণ্টন’ দুর্নীতি মামলায় প্রথম কোনও মন্ত্রী গ্রেপ্তার হলেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।এর পারই তাকে আদালতে তোলা হবে ।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার মন্ত্রীর বাড়িতে ইডি তল্লাশি চালানোর সময়ই সন্ধ্যার দিকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তিনি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে তল্লাশি প্রসঙ্গে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন ”প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে বিজেপি।দলটি ইডিকে ব্যবহার করে রাজ্যসরকারকে তছনস করে দিতে চাইছে। মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, গত এক বছর ধরে চলছে রাজ্যব্যাপী ইডি-র হানা।অথচ বিজেপির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও ইডি তাদের কারো বাড়িতে অভিযান চালায়না।”
মুখ্যমন্ত্রীর ওই সাংবাদিক সন্মেলনের জবাব দিতে গিয়ে রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলীয় নেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর কথিত মতে বিজেপির কোন নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে এমন কোন অভিযোগ থাকলে তারা তাদের বিরুদ্ধে কেন আদালতে জানাচ্ছেননা বা মামলা করছেননা? তাঁর তথা রাজ্য সরকারের দুণীতিবাজ মন্ত্রী ও নেতাদের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট তদন্তের নির্দেশ দিয়ছেন। আর এই তদন্ত হচ্ছে কোর্টের মনিটরিং বা নজরদারিতে।