নিজস্ব প্রতিনিধি
ভারতের আসাম রাজ্য জিহাদি কার্যকলাপের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে, বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের একথা বলেছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। আসামে সাম্প্রতিককালের পাঁচটি ঘটনায় বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠন আনসারুল ইসলামের যোগ মিলেছে বলে জানিয়েছেন হিমন্ত। এই সব বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ভিষণ উদ্বিগ্ন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কাজ করছে, তবে মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে আসামের সাধারণ মানুষকে ব্যাপকভাবে সচেতন হতে বলেছেন, কাউকে সন্দেহভাজন মনে হলেই পুলিশকে খবর দিতে বলেছেন তিনি।
এদিন উদ্বেগের সঙ্গে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, “আনসারুল ইসলামের সদস্য ৬ জন বাংলাদেশি আসামে ঢুকেছে। এরা রাজ্যে ঢুকে তরুণ প্রজন্মকে মৌলবাদী মগজধোলাই দিচ্ছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে বারপেতা থেকে এদের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” হিমন্ত অভিযোগ করেন, রাজ্যে বাইরের লোক ঢুকে মাদ্রাসায় ছাত্রদের মগজধোলাই দিচ্ছে, জিহাদে উদ্বুদ্ধ করছে তাদের। যা রীতিমতো আতঙ্কের বিষয়।”
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তর দাবি, “জঙ্গি কার্যকলাপ আর জিহাদি কাজের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে মগজধোলাই দেওয়া থেকে বিষয়টা শুরু হয়। এরপরে ইসলামী মৌলবাদের প্রচারে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সব শেষে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়া।” হিমন্ত আরও বলেন, “২০১৬-১৭ সালে যারা অবৈধ ভাবে রাজ্যে ঢুকেছে তারা কোভিডের সময় জনসংযোগের জন্য অনেক ক্যাম্প করেছে।”
অসমের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “এখনও পর্যন্ত একজন মাত্র সন্দেহভাজন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই কারণে আমি সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করছি, যদি দেখেন রাজ্যের বাইরের কেউ হঠাৎ করে মাদ্রাসার শিক্ষক বা ইমাম হয়ে বসেছেন, এমন কাউকে মনে হলে দ্রুত পুলিশকে খবর দিন।”
প্রসঙ্গত, বুধবার আাসমে ধরা পড়েছে এক বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। গ্রেপ্তার করা হয়েছে মুফতি মোস্তাফা নামের মরিগাঁও এলাকার এক মাদ্রাসা শিক্ষককে। মোস্তাফা এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। ওই ব্যক্তি বাংলাদেশের অন্যতম জঙ্গি সংগঠন আনসারুল বাংলার একজন সক্রিয় সদস্য বলেই পুলিশের দাবি।
এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জনার জন্য বাংলদেশের কলকাতাস্থ উপ-হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হলে সেখানকার কাউন্সিলর (কনস্যুলেট) মো: বশিরউদ্দিন বলেন, আসাম রাজ্য তথা ভারতের কোথায়ও অবৈধ বাংলাদেশী নাগরিকের কোন আস্তিত্ব নেই। বশির বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে সবধরণের জঙ্গি বা জিহাদি তৎপরতাকে বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন। জঙ্গি কার্যক্রম বা জিহাদি তৎপরতার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নীতি জিরো টলারেন্স। সেইভাবে তিনি দেশে বা বিদেশের মাটিতে যে কোন জঙ্গী বা জিহাদী তৎপরতাকে প্রশ্রয় দিতে রাজী নন।।