এম এ রহিম.বাংলাদেশ থেক
পদ্মার ইলিশ! ওপার বাংলার ভোজনরসিক বাঙালিদের কাছেও বেশ লোভনীয়। জমাইষষ্ঠি আর দূর্গাপূজোর মওসুমে বাংলাদেশের ইলিশ পাতে না উঠলে জামাই আর অতথিদের পাতে না উঠলে যেন অপূর্ণই থেকে যায় খাবারের মজাটাই।
যুগযুগ ধরেই বাংলার মানুষ জানে মাছের রাজা ইলিশ। স্বাদেভরা পদ্মার রুপালি ইলিশ হলে তো আর কোন কথাই নাই। সেই রুপালি ইলিশের চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে বিশেষ করে পশ্চিমবাংলায় বাংলাদেশী ইলিশের চাহিদা ও কদর অনেক বেশী, তার প্রমাণমেলে যখন বাংলাদেশ থেকে ইলিশের চালান কলকাতার বিভিন্ন মোকামে পৌছে তখন সেখানে ইলিশ কেনার জন্য লোকজনের প্রতিযোগিতা দেখলে। আর এবার বাংলাদেশে ইলিশের বাজার ছড়াছড়ি। তাই এবার পূজার আগেই ভারতে আমদানি বাড়বে ইলিশের, যা ক্রেতারা অপেক্ষাকৃত কমদামেই কিনতে পারবে পশ্চিবঙ্গের বাবুরাসরিষাবাটা ইলিশ ঝোল ও পান্তাভাতে ভাজা ইলিশের মজাই আলাদা এমনি প্রবাদ রয়েছে দুইপাড়ে বাংলায়। চলতি মৌসুমে পদ্মায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাকে ঝাকে ইলিশ। বাংলার বাজারে কমছে দামও। দুই মাস ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণেই বেড়েছে মাছের প্রজনও। ফলে এবার দুর্গাপূজার আগেই বাংলাদেশ থেকে কমদামেই বেশী পরিমাণে ভারতে ইলিশ রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ শার্শা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আবুল হাসান জানান.ভারতে এইমূহুর্তে ইলিশ রফতানি বন্ধ রয়েছে। তবে এবার প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে। প্রতিবারের ন্যায় এবারও পূজার আগে ভারতে ইলিশ রফতানির বিষয়ে ভাবছেন বাংলাদেশ সরকার তথা সংশ্লিষ্ট দফতর।
মাছ রফতানি কারক প্রতিনিধি আসাদুজামান আসাদ ও রয়েল হোসেন জানান, ভারতে ইলিশের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফলে মাছ ভারতে ইলিশ রফতানির জন্য অনুমতির চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এই মূহুর্তে ইলিশ রফতানি করতে পারলে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে মনে করেন তারা।
প্রতিবছরের মতো এবারও ইলিশের দাম কমায় বাংলাদেশের বিভিন্ন মাছের আড়তে বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে। সাইজ ভেদে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি মাঝারি সাইজের ইলিশ। বাজারগুলোতে বেড়েছে ইলিশের সরবরাহমুন্সীগঞ্জের পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ। সরবরাহ বেশি থাকায় কমেছে দাম।লৌহজং, শরীয়তপুর, মাদারীপুরের শিবচর, পাবনা, চাঁদপুর ও সিরাজগঞ্জের অন্তত ১০ হাজার জেলে মাছ বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছেন।
সোওয়া এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ আগে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হলেও, এখন দাম নেমেছে অর্ধেকেরও কম। ৩০ কিলোমিটার জুড়ে পদ্মা নদীও গজারিয়া উপজেলার ৩৫ কিলোমিটার এলাকায় মেঘনার বিস্তীর্ণ নদীর গভীর থেকে ইলিশ আহরণ করছেন জেলেরা। ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখরিত ইলিশের বাজার। পাইকারি ও খুচরা বিভিন্নভাবে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয় ব্যাবসায়িরা জানান, ইলিশের ব্যাপক আমদনি থাকার কারণে বাজারে দামও কম, আর একারণে বাজারে অন্য মাছ বিক্রিতে মার খাচ্ছে খুচরো ব্যাবসায়িরা।