এম এ রহিম, বেনাপোল

সৌহার্দ্য সম্প্রীতির দুটি দেশ ভারত ও বাংলাদেশ। স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের ভূমিকা  ছিল  প্রভূত। মার্চ মাস স্বাধীনতার মাস। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারত ছিল বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু।  মুক্তযুদ্ধকালিন ভারত আমাদের এক কোটি মানুষকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছিল। সে সময় বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের মধ্যে যে বন্ধুপ্রতীম ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত হয়েছিলো। সেই ভ্রাতৃত্ববোধ সম্প্রসারণের পাশাপাশি দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিজিবি-বিএসএফ রিট্রিট প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণত: দুই দেশের বিভিন্ন জাতীয় দিবস বিশেষ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে  যৌথ এই প্যারেডটি অনুষ্ঠিত হয়। বেনাপোলে ই গেট উদ্বাধন ও টিট্রেট শিরোমনি পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আাসাদুজামান খান কামাল উপরিউক্ত কথাঘুলো  বলেন।

বিকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী  মনোমুগ্ধকর এই রিট্রিট প্যারেডে  অংশগ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশের বিজিবি ও ভারতের বিএসএফ সদসকে এবং আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট বিজিবি ও বিএসএফ-র  মহাপরিচালক এবং বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি মহোদয়সহ সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান।  এছাড়াও বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকার থেকে  এই প্যারেড  দর্শনার্থী,  প্রিন্টও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দকও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী  আসাদুজ্জামান।বেনাপোল ইমিগ্রেশনে তিনি আরো বলেন স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকার  বাংলাদেশের  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  ই-পাসপোর্ট ও ই-গেটের মাধ্যমে ডিজিটালাইজড ইমিগ্রেশন কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। যাত্রী সেবায় মানোন্নয়ন তথা দ্রুত ও নিরাপদ ইমিগ্রেশনের জন্য ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রতিটি সদস্য  প্রধানমন্ত্রীর এই সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মার্ণ করতে  সচেষ্ট রয়েছে বলেও  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান

শনিবার বিকাল শোয়া ৪টায় বাংলাদেশের  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী  বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে এসে পৌছান। প্রথমে তিনি বেনাপোল স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন চত্তরে মতবিনিময় শেষে চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে ইলেকট্রনিক গেটের উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধন শেষে বিকাল ৫টায় তিনি বেনাপোল ফুটবল মাঠে এক সুধিসমাবেশে বক্তব্য রাখেন।এরপর বিকাল সাড়ে ৫টায় চেকপোস্টের নো ম্যান্সল্যান্ডে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যকার রিট্রেট সেরিমনি অনুষ্ঠানে যোগ দেন ।

এসময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজির আহমেদ এমপি,স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য,যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন,যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. নাসির উদ্দিন, যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য শাহিন চাকলাদার, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ নুরুল আনোয়ার উপস্থিত ছিলেন।

যশোর সার্কিট হাউজ থেকে রওনা দিয়ে বেনাপোলে পৌছানোর পর ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ নুরুল আনোয়ার  তাদেরকে ফুলের শুভেচ্ছা জানান।বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ই-গেট রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী মির্জা নুরুল আমিন বলেন, “প্রথম পর্যায়ে চারটি গেট করা হয়েছে। ভারতে প্রবেশের জন্য দুটি ও ভারত থেকে আসা যাত্রীদের জন্য দুটি করে।উদ্বোধনের পরপরই যাত্রীদের জন্য পুরোপুরি ই-গেট চালু করা হয়েছে।মাত্র ৪০ সেকেন্ড সময় লাগবে এ কাজে।”

এদিন ইলেকট্রনিক গেটের মাধ্যমে কিছু যাত্রীর সফলভাবে ইমিগ্রেশন  সম্পন্ন করার বিষয়টি  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যবেক্ষণ করেন মন্ত্রী।

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ নুরুল আনোয়ার বলেন,২০২২ সালের ৭ জুন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বহির্গমণে  ১৩টি ও আগমনীতে ১৩টি ই-গেট, ১৮নভেম্বর শাহ আমনত বিমান বন্দরে বহির্গমনে ৩টি ও আগমনীতে ৩টি ই-গেইট এবং এবছর ৮জানুয়ারি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বহির্গমণে ৩টি ও আগমণীতে ৩টি ই-গেট  চালুর মাধ্যমে সম্পুর্ন  আধুনিক ইমিগ্রেশন সুবিধা শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ১,১৫০০০ হাজারের অধিক যাত্রী এই সেবা গ্রহনণ করেছেন। এই ই-গেট সেবা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে প্রথম প্রবর্তন করা হয়েছে।সুধি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাংসদ শেখ আফিল উদ্দিন । প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড.মনিরুল ইসলাম মনির প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বিজিবি ও বিএসএফের উর্ধ্বতন কর্মকতাবৃন্দ, যশোর জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং সীমান্তবর্তী বিভিন্ন স্থান হতে আগত উভয় দেশের পর্যটকগণ উপস্থিত ছিলেন।