এম এ রহিম, বাংলাদেশ থেকে
যাত্রী সাধারণের সুবিধার্থে বিমানবালার মত এখন বাংলাদেশের ট্রেনেও থাকবে ‘ট্রেনবালা।” হ্যা ঠিকই জেনেছেন বিমানের মত এমনই ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে ট্রেনবালার মত পদ সৃষ্টি করে যাত্রিদের সুবিধা দিতে।
কর্তৃপক্ষ আকাশপথে ভ্রমণের মতই যাত্রিদের অভ্যর্থনা জানাবেন ‘বিমানবালা। ঠিক সেই আদলেই যাত্রীসেবা দেবে এই ট্রেনবালারাও।প্রথমবারের মতো পূর্বাঞ্চল রেলওয়েতে ইতোমধ্যে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ৩৫ নারী স্টুয়ার্ড বা ‘ট্রেনবালা’-কে। তারা বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত বিশেষ পোশাক পরে আন্তরিকতার সাথে ট্রেনের চলতিপথে সব ধরনের যাত্রিদের সহযোগিতা ও সুবিধা প্রদান করতে নিয়োজিত থাকছে। যাত্রীদের।ট্রেনভ্রমণ করতে গিয়ে কোন যাত্রীর নির্দিষ্টবগি বা আসন খুঁজে না পেলে অনায়াসে সেই কাজটি করা, যাত্রী ওঠা-নামা করতে গিয়ে হর-হামেশায় নানাবিধ বিড়ম্বনায় পড়তে হয় যাত্রীদের, সেগুলোকে সমাধান করা ইত্যাদি। মোট কথা এখন থেকে ট্রেন যাত্রীদের সহযোগিতার জন্য বিশেষ পোশাকে প্রস্তুত থাকবেন নারীর কর্মী-রা, যাদের পরিচিতি থাকবে ট্রেনবালা হিসাবে।
শুরুতে ঢাকা-কক্সবাজার এক্সপ্রেসে ট্রেনে যুক্ত হওয়ার পর, এখন সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেসেও যুক্ত করা হয়েছে ট্রেনবালাদের। অল্পদিনের মধ্যে ট্রেনে যাত্রীদের সেবার পাশাপাশি পেশাগত দায়িত্বে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন তারা।
ট্রেনবালারা বলছেন, যাত্রীরা অনেক সময় ব্যাগ রাখতে বা আসন খুঁজে নিতে সমস্যায় পরেন। তাদের সেবার জন্যই রেল কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগ।
দেশে রেলসেবার মানোন্নয়নে এ ধরনের উদ্যোগকে প্রশংসার চোখেই দেখছেন ট্রেনযাত্রীরাও।
শুক্রবার যাত্রী আসফিয়া সুলতানা ও রাজু কুমার দাস বলেন, অনেক সময় প্রয়োজনে ট্রেনের পুরুষ সেবাদান কারীদের অনেক কিছুই বলা যেত না। কিন্তু ট্রেনবালার মত এই নতুন ডাইমেনসন আমাদের জন্য সরকারের এই পদক্ষেপ প্রশংসার দাবী রাখে।।এ্ই নতুন পদক্ষেপের ব্যাপারে বাংলাদেশ-ভারত চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, যাত্রীবান্ধব বর্তান সরকারের রেল-সড়ক-আকাশ ও নদীপথসহ যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন এনেছে যাকে ‘স্মর্টসেবা’-ই বলা চলে। এতে করে রেল যাত্রীদের ভ্রমণে আগ্রহ বাড়বে। তেমনি রেলে বৃদ্ধিপাবে রাজস্ব আয়। এজন্য মতিয়র রহমান সরকার ও রেলকর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।
যশোরের রেল স্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান সহিদ জানান বিমানবালার মত ট্রেনবালা-র এই নতুন পদক্ষেপ পর্যায়ক্রমে অপেক্ষাকৃত বেশী দূরত্ব-র লোকাল ও দূরপাল্লার সব রেলেই ট্রেনবালার মত এই পরিসেবা জারীর পরিকল্পনা রয়েছে রেল কর্তৃপক্ষের।
যাত্রীদের সেবাদানকারী এসব ট্রেনবালাদে-র প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিতেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্মকর্তারা। এ প্রসঙ্গে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নাজমুল ইসলাম বলেন, যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্নে ও যাত্রা স্বাচ্ছন্দ্য করতে ট্রেনবালারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রাথমিক অবস্থায় শুধু এসি চেয়ার কোচে দায়িত্ব পালন করছেন ট্রেনবালারা। পর্যায়ক্রমে আন্তঃনগর সব ট্রেনেই ট্রেনবালাদের যুক্ত করার কথা জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। আগামীতে একের পর এক ট্রেনে যুক্ত হচ্ছে ট্রেনবালা সার্ভিস। রেলওয়ের ভাষায় যাকে বলা হচ্ছে স্মার্টনেস ‘ট্রেন স্টুয়ার্ড।