নিজস্ব রিপোর্ট

পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ। মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎই একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে এগরার খাদিকুল গ্রাম। বিস্ফোরণের দাপটে উড়ে গিয়েছে কারখানার ছাদ। মৃতদেহ ছিটকে গিয়ে পড়ে কয়েক মিটার দূরের পুকুরে। কারখানার চারদিকে ছড়িয়ছিটিয়ে পড়ে দেহাংশ। ঘটনায় ভয়াবহ আগুন লাগে এলাকায়। আকাশ ঢেকে যায় কালো ধোঁয়ায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকলে খবর দেওয়া হয়। ভয়ঙ্কর ওই বিস্ফোরণে  মৃতের সরকারীভাবে ৯ জনের কথা জানানো হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৭ জন। সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপার  ওই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে ঘটনায় অন্তত ২১ জনের মৃত্যর কথা জানায় স্থানীয় লোকজন।

বর্তমানে  ওই এলাকাটি মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। এলাকার কোথায় পড়ে রয়েছে পা, কোথাও হাত।  গ্রামজুড়ে এখন শুধু কান্নার রোল আর আর্ত চিৎকার।  বিস্ফোরণের তীব্রতা এত  বেশি ছিল যে বাড়ির ছাদ থেকে ছিটকে দেহগুলি পড়েছে পার্শ্ববর্তী পুকুরে। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “ঘটনার জন্য দায়ী পুলিশ-প্রশাসন। ওনারা সচেতন থাকলে এই ঘটনা ঘটত না। বাজীর আড়ালে এই কারখানায় রীতিমত বোম তৈরী হতো।  গ্রামবাসী জানায়, “এখানে মহিলারা বেশি কাজ করতেন। কারখানার মালিক ভানু বাগ পুলিশকে মাশোহারা দিতো।”

যদিও এ দিন পুলিশ সুপার বলেন, “বেআইনি বাজি কারখানা চালানোর অভিযোগে কারখানার মালিক ভাণু বাগকে  এর আগেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে হাসপাতালে। বাজি কারখানার আড়ালে বোমা তৈরি  কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনায় ভয়াবহ আগুন লাগে এলাকায়। আকাশ ঢেকে যায় কালো ধোঁয়ায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকলে খবর দেওয়া হয়। গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

এ প্রসঙ্গ  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান,”যিনি মালিক তাঁকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে আদালত থেকে জামিন পেয়ে যান সে। গত কয়েকদিন হল বেআইনিভাবে ফের সে এই  শুরু করেছিলেন। তিনি বিস্ফোরণের ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ  দিয়েছেন। ঘটনাস্থলে রাজ্য পুলিশের এডিজি সিআইএফ জ্ঞানবন্ত সিং-কে পাঠানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।  মঙ্গলবার বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ পরই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা জানিয়েছেন মমতা । তবে স্থানীয় পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মমতা। মমতা জানিয়েছেন,  এই বিস্ফোরণের তদন্তের জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এন আইকে দিয়ে তদন্ত করালেও আমার কোন আপত্তি নেই।

তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, অবৈধ ভাবেই চলত এই বাজি কারখানা। মৃত্যুর সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে তারা।

পুলিশ জানায়, আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে হাসপাতালে। বাজি কারখানার আড়ালে বোমা তৈরি হত কিনা গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে।