গোফরান পলাশ
বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সরকারের ১৪ বছরের উন্নয়নের সেই বার্তাকে লিফলেটের মাধ্যমে দেশটির জনগণ ও বিশ্ববাসির কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য জাতীয় সংসদ পটুয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও প্রতিরক্ষা স্থায়ি কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ মোঃ মহিববুর রহমান মহিব একটি বৃহত্তর কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। তার আগে (১৮ মে বৃহস্পতিবার) ওই ‘লিফলেট বিতরণ’ কর্মসূচিটি নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখী হন সাংসদ মহিবুর রহমান।পটুয়াখালির কলাপাড়া প্রেসক্লাবে-র ইঞ্জিনিয়ার মোঃ তৌহীদুর রহমান (সিআইপি) মিলনায়তনে সাংবাদিকদের কাছে কর্মসূচির বিস্তারিত বিষয়বস্তু তুলে ধরে লিখিত বক্তব্য রাখেন সাংসদ।
উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে লিখিত বক্তব্য পেশ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার টানা তৃতীয় মেয়াদের ১৪ বছর অতিক্রম করে অত্যন্ত সফলতার সাথে বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে আকাশচুম্বী চ্যালেঞ্জ, জঙ্গিবাদ নির্মূল ও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে উন্নয়ন অগ্রগতির নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ করেছেন এবং এর লক্ষ্যমাত্রার পরিধি দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। খাদ্য, নিরাপত্তা, বাসস্থান, চিকিৎসা, যোগাযোগ, কৃষি, ক্রীড়া, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নতিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আজ বিশ্বের দরবারে একটি ‘রোল মডেল।’ যার প্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যের প্রেসিডেন্ট ঋষি সুনাকের কন্যারা আজ শেখ হাসিনার মত বিশ্ব নেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখে।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে এমপি মহিব বলেন, ‘কলাপাড়ায় দেশের তৃতীয় বৃহত্তম পায়রা সমুদ্র বন্দর নির্মাণ, রাঙ্গাবালী থানা গঠন ও উপজেলায় উন্নীতকরণ, ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, RPCL কর্তৃক ১৩২০ মেগাওয়াট নির্মাণাধীন এবং সৌর প্লান্টসহ আরও ৪৩৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, দেশের সর্বদক্ষিণাঞ্চলের সাগরসৈকত কুয়াকাটাকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্রে উন্নীতকরণ, নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিণ ক্যাবলের মাধ্যমে রাঙ্গাবলী উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন, মডেল মসজিদ নির্মাণ, শের-ই –বাংলা নৌ-ঘাঁটি স্থাপন, কুয়াকাটা মহাসড়কে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল সেতু নির্মাণ, দেশের তৃতীয় সাবমেরিণ ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন নির্মাণ, আন্ধারমানিক নদীর উপর সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু নির্মাণ, মহিপুরকে থানায় ও কুয়াকাটাকে পৌরসভায় উন্নীতকরণ, রজপাড়া থেকে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ফোর লেন ও ছয় লেনের সড়ক নির্মাণ, কলাপাড়া ও কুয়াকাটা পৌরসভা কমপ্লেক্স নির্মাণ, কলাপাড়া-রাঙ্গাবালীতে প্রশাসনিক ভবন, অত্যাধুনিক ডাকবাংলো সহ একাধিক ভবন নির্মাণ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ভিজিডি, ভিজিএফ, ১৭১১০ জন বয়স্ক ভাতা, ৯৫৯৩ জন বিধবা ভাতা, ৪৭৬৬ জন প্রতিবন্ধী, ৩৮৮ জন অনগ্রসর, ৮ জন বেদে ভাতা পান, আধুনিক কৃষি সরঞ্জামাদি সহ কৃষিতে ভর্তুকি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, মহিপুর-আলিপুরে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র নির্মাণ, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের অবকাঠামগত উন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে এসএসসি ৬টি, দাখিল ২টি ও এইচএসসি ৮টি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, ‘মুজিব শতবর্ষ’ উপলক্ষে দু’উপজেলায় ২ শতাংশ জমি সহ ৩ হাজার ৯ শত ৭৯টি অসহায় পরিবারের মাঝে গৃহ বিতরণ এবং ৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বন্যার সময়ের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ৩৪টি ‘মুজিব কেল্লা’ নির্মাণ করা হয়েছে। রাঙ্গাবালীতে জুডিসিয়াল কমপ্লেক্স (বিচারিক আদালত) ভবন নির্মাণ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
এমপি মহিব আরও বলেন,’ দেশরত্ন শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তাঁর পরিবার ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে অসহায়দের গৃহ নির্মাণ, ৫০০ পরিবারকে গরু, ছাগল ও সেলাই মেশিন ক্রয় করতে ২৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান ছাড়াও শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়।
করোনাকলীন কঠিন আবস্থা মোকাবেলায় পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার, প্রতিরোধী অষুধ, পিপিই, মাক্স বিতরণ এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয় সাংসদ মহিবের পরিবার। তাই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের লক্ষ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে দেশবাসিকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘নৌকায়’ ভোট দিয়ে বাংলাদেশকে সোনারবাংলা গড়ার জন্য আওয়ামী লীগের কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করুন। কেননা শেখ হাসিনা সরকারের কোন বিকল্প নেই , তাই দেশে গণতন্ত্র রক্ষা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায়র জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার বারবার দরকার।’
কলাপাড়ায় এই সাংবাদিক বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ সৈয়দ নাসির উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম রাকিবুল আহসান, সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব তালুকদার, সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান চুন্নু, যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল আলম, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব ও জেলা পরিষদ সদস্য বিলকিস জাহান, কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার ও পৌর প্যানেল মেয়র মোঃ হুমায়ুন কবির প্রমূখ।
উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের আভূতপূর্ব উন্নতয়নের স্বর্নময়কীর্তি পদ্মাসেতু নির্মাণ ও চালুকরণ। বাংলাদেশের পদ্মাসেতুটি আজ বিশ্ববাসীর কাছে তথা আন্তর্জাতিকভাবে জন-যাতায়াত ও পণ্যপরিবহণের জন্য একটি যুগান্তকারী ‘গ্লোবাল সেতু বন্ধন’ সৃষ্টি করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ পরিচালনা আর নিরলস তত্বাবধায়নে এবং সর্বস্তরের জনগণের সহায়তায় বাংলাদেশের বহু প্রতিক্ষিত স্বপ্ন বাংলাদেশের অন্যতম কীর্তি এই পদ্মা সেতু বাংলাদেশকে সিমাহিন সমৃদ্ধির পথ দেখিয়েছে।