বাংলাদেশের ১১৪ পটুয়াখালী-৪ এর আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মোঃ মহিব্বুর রহমান এমপি’কে সম্মান জানালো ইন্দো বাংলা প্রেসক্লাব। ২৩মে সন্ধ্যায় ক্লাব প্রাঙ্গণে তাকে সম্মান জানায় ক্লাবের কার্যনির্বাহী  সদস্যরা (এক্সিকিউটিভ মেম্বারস)। পরে ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে এক খোলামেলা আড্ডায় মেতে উঠেন  সংসদ সদস্য। এ সময়  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের বিস্তারিত  তথ্য তুলে ধরেন মোঃ মহিব্বুর রহমান।

প্রণব ভট্রাচার্য্য, ভয়েস অফ ক্যালকাটা

বাংলাদেশ এখন স্বয়ংসম্পূর্ণের পথে।শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক অবস্থা পূর্বের তুলনায় অনেক উন্নতি লাভ করেছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল এবং অর্থনৈতিক সূচকে আজ ৩৫ তম দেশ হিসেবে স্বীকৃত। আবার করোনা ভয়াবহ মহামারী মোকাবিলায় ৫ম দেশের তালিকায় স্থান বাংলাদেশের। আমাদের দেশের ১৩ কোটি মানুষ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শতভাগ করোনা টিকার আওতায় এসেছে। করোনা পরবর্তী বৈশ্যিক অর্থনৈতিক মন্দা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাংলাদেশের মানুষের জীবন যাপনে কোনোরূপ নেতিবাচক প্রভাব পরেনি। আজকে বাংলাদেশের মানুষ সুখে আছে শান্তিতে বিরাজ করছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে একমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনার ধারাবাহিক ও যোগ্য নেতৃত্বের কারনেই।  আজ (২৩ মে) ভারতের কলকাতায় ইন্দো বাংলা প্রেস ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এ কথা জানান জাতীয় সংসদ ১১৪ পটুয়াখালী ৪ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ মহিব্বুর রহমান মহিব।তিনি বলেন, বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ও সামরিক বিভাগ, শিল্প, বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সমাজকল্যাণ ও বিজ্ঞান গবেষণায় অনেক অগ্রগতি লাভ করেছে।মহাসড়ক,পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, ১০০% বিদ্যুতায়ন, কৃষি ও মৎস্যজীবি দের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন গোটা দেশকে আলোকিত করেছে।

এ ছাড়াও  জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের দেড়যুগে বাংলাদেশের যে সব উন্নয়ন বিশ্ববাসির নজর কেড়েছে তার মধ্যে-  বিশেষ করে-নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ অন্যতম। তা ছাড়া, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মহাকাশ বিজয়, রাজধানীর জনজাতায়তের সুবিধায় ঢাকায় মেট্রোরেল চালু, চট্রগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে এশিয়ায় প্রথম বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শের-ই বাংলা নৌ ঘাটি, বাংলাদেশের দ্বীপাঞ্চলসহ শত ভাগ বিদ্যুতায়ন, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কুয়াকাটায় সাব মেরিন ক্যাবল স্থাপন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ,  রাজধানী ঢাকা – কুয়াকাটা মহাসড়কে শেখ কামাল-শেখ জামাল-শেখ রাসেল-পায়রা সেতু নির্মাণ করে ফেরী বিহীন যাতায়ত এবং আধুনিক সুযোগ সুবিধার মধ্য দিয়ে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটাকে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্রে রূপায়ন, সমুদ্র বিজয়, সকল উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণ, ভুমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে ই-নামজারী, সকল ইউনিয়নে ‘তথ্য সেবা’ কেন্দ্র চালু, ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোড় গোড়ায় পৌঁছানো যা জাতিসংঘেও প্রশংসিত এবং ধন্যবাদ প্রস্তাবের মাধ্যমে স্বীকৃতি লাভ করেছে। কাজেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশ আজ ডিজিটালাইজড হয়ে এখন “স্মার্ট বাংলাদেশ”নির্মাণের যাত্রায় এগুচ্ছে । “স্মার্ট সিটিজেন, “স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনোমি, “স্মার্ট গভর্ণমেন্ট” এই ৪টি বিষয়কে মুল ভিত্তি ধরে গড়ে উঠবে নতুন প্রজন্মের নতুন দেশ “স্মার্ট বাংলাদেশ”। রাজধানী ঢাকায়  জননেত্রী শেখ হাসিনা এ বছর মেট্রোরেলে চড়ে “স্মার্ট বাংলাদেশে” নির্মাণের যাত্রা শুরু করেছেন। একটু পরিস্কার করে বলতে চাই-ডিজিটাল বাংলাদেশের স্মার্ট ভার্সনই হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ।এদিন সাংবাদিকদের কাছে এম পি মহিব্বুর রহমান বাংলাদেশের জনগনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের নেয়া সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর বিবরণ তুলে ধরে বলেন, দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রত্যেককে মুজিব বর্ষের দুই শতাংশ সরকারি খাস জমি ও একটি পাঁকা ভবন নির্মাণ করে দেয়া, ষাটোর্ধ সকলকে বয়ষ্ক ভাতা প্রদান, বিধবা, বেঁদে ও  হরিজন সম্প্রদায়, প্রতিবন্ধী অনঅগ্রসর মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্মানী ভাতা, চাকুরীজীবিদের বৈশাখী ভাতা, বিনা মুল্যে এক কোটি শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষা বর্ষের শুরুতে ৩৫ কোটি বই প্রদান, অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান, মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে জেলেদের খাদ্য সহায়তা প্রদান, জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া (বকনা বাছুর বিতরণ), একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে “শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব” স্থাপন ও জরাজীর্ন ভবন অপসারণ করে নতুন ভবন নির্মাণ, কৃষকদের মাঝে বিনা মুল্যে সার বীজ এবং ৭০% ভর্তুকীতে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির সুবিধা প্রদান, ভিজিডি (ভার্নাবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট) ভিজিএফ (ভার্নাবল গ্রুপ ফিডিং) কার্ডের মাধ্যমে অস্বচ্ছল পরিবারকে মাসে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ, দ্রব্যমুল্য উর্ধ্বগতি হলে টিসিবি ও ওএমএস ডিলারের মাধ্যমে খাদ্যপণ্য সরকারি ভাবে বিক্রি করে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা, সুপেয় বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য প্রতি ১০টি পরিবারের জন্য একটি করে গভীর নলকুপ স্থাপন, তা ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গ্রামকে শহরের সুবিধা দেয়ার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নের ২টি করে গ্রামে পৌরসভা/সিটিকর্পোরেশনের ন্যায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর বাস্তব জনমুখী সিদ্ধান্ত এবং প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু গড় আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এত সব উন্নয়নের কারণেই বাংলাদেশের জনগণ আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ-কে পুণ:রায় বিপুল ভোটে নির্বাচিত করে শেখ হাসিনাকে ফের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসাবেন বলে আমি মনে করি।এমপি বলেন, ভারত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু, এক সময় আমরা একই (ভারতবর্ষ) ছিলাম, ঐতিহাসিক কারনে ভারতের সহযোগিতায় আমরা আজ স্বাধীন বাংলাদেশের বাসিন্দা। এপারবাংলা– ওপারবাংলা ভাষা, চেহারা, কালচার,  খাদ্যাভ্যাস ও সামাজিক রীতিনীতি একই হওয়ায় আমাদের দুই বাংলার সম্পর্ক চিরদিন অম্লান ও অটুট থাকবে। এমনকি দুই দেশের মাতৃভাষা বাংলা আজ আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত। আমাদের দু’দেশের বাঙালির ভালবাসার অভিন্ন হৃদয়কে কাটাতাড়ের বেড়া দিয়ে আলাদা করা যাবেনা।

মহিব্বুর রহমান ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা জানিয়ে বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে দু’দেশের এই বন্ধুত্বপূর্ণ  সহঅবস্থান ছিল-আছে থাকবে। কোন অশুভ শক্তিই তা শেষ করতে পারবে না।মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে সংসদ সদস্য বলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে ভারতের শহীদ সেনা ও মানুষদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ থাকবে আপামর বাংলাদেশ বাসী। বিশ্বের মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশ এমন দুই দেশ মিলে নজির সৃষ্টি করেছে যাদের জাতীয় সংগীত রচয়িতা একজনই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আবার পশ্চিমবঙ্গ সহ পূর্ব ভারতের বেশকিছু রাজ্যের ভাষা ও সংস্কৃতি একই আঙিনায় বাধা। আগামী দিনে সাহিত্য চর্চা, শিল্প সংস্কৃতির মেলবন্ধন ও বহিঃ বাণিজ্যের প্রসার ঘটলে দু’দেশের মানুষই সবথেকে বেশি উপকৃত হবেন। আওয়ামী লীগের সরকার সেই লক্ষ্যকে পূরণ করবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।মতবিনিময়ের আগে ইন্দু বাংলা প্রেসক্লাবের তরফ থেকে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য তথা সংসদীয় প্রতিরক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির অন্যতম সদস্য মোহাম্মদ মহিব্বুর রহমানকে সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। সাথে সাথে সম্মানিত সংসদ সদস্য মোহাম্মদ মহিব্বুর রহমানকে কলকাতার ইন্দো বাংলা প্রেস ক্লাবের আজীবন সাম্মানিক সদস্য পদ দেওয়া হয়। প্রেসক্লাবের মেন্টর সদস্য তপন রায়, দীপক মুখার্জী, পরিতোষ পাল, ক্লাবের সভাপতি কিংশুক চক্রবর্তী, সহ-সভাপতি সত্যজিৎ চক্রবর্তী, সম্পাদক শুভজিৎ পূততুন্ড, কোষাধ্যক্ষ দীপক দেবনাথ, কো-অরডিনেটর ভাস্কর সরদার, ছাড়াও পরিচালন সমিতির অপর দুই  সদস্য সুকান্ত চট্টোপাধ্যায় ও ধর্মেন্দ্র সিং উপস্থিত থেকে সংসদ সদস্য মোঃ মহিব্রবুর রহমানকে সংগঠনের স্মারক ও উত্তরীয় দিয়ে সম্মানিত করেন।