এম এ রহিম, বাংলাদেশ থেকে
আবারও বিভিন্ন সিমান্ত শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারতীয় পেয়াজ রফতানি শুরু হয়েছে। ফলে বাংলাদেশে পেয়াজের দাম অবিশাসা কমতে শুরু করেছে। ফিরেছে পেয়াজের বাজারে স্বস্তি। এক দু’দিনের ব্যাবধানে প্রতিকেজি পেয়াজের দাম কমে গেছে ৩৫থেকে ৪০টাকা। এর আগে ছিল ১০০টাকা। সেইদাম নেমে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে৬৫ টাকা্য়। ভারতীয় পেয়াজ বেশি বেশি আমদানি হলে দাম আরও নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে ব্যাবসায়ি নেতারা জানিয়েছেন।
স্থানীয় ক্রেতা আরিনা খাতুন ও মনির হোসেন বলেন, ‘এসময়ে পেয়াজের দাম ১০০ টাকা থেকে এখন প্রতিকেজি ৩৫/৪০ টাকা হওয়ায় আমরা খুব খুশি, তবে সামনে বকরঈদ তাই তার াগে যেন পেয়াজের দাম না বাড়ে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাজার মনিটর করতে হবে।’
একটানা ৮০দিন পর সোমবার রাতে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৭৫ মেট্রিক টন) পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে পণ্যচালানটি বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। এর পরই স্থানীয় বাজারে পেয়াজের দাম কমেতে শুরু করেছে। দাম আরো কমার আশা বিক্রেতাদের। উল্লেখ্য,গত ১৫ মার্চ থেকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ইমপোর্ট পারমিট বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ সরকার।
নিন্ম আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে ৪ জুন থেকে আবারও পেয়াজ আমদানির অনুমতি দেয় বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রনালয়। সোমবার দেশের বিভিন্ন শুল্কস্টেশন দিয়ে ৭৭ট্রাক পেয়াজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উদ্ভিদ কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার ওই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অন্যান্য বন্দর যেমন হিলি, সোনা মসজিদ ও ভোমরা বন্দর দিয়ে যে পরিমাণ পেঁয়াজ ভারত থেকে আমদানি করা হয়, তার চার ভাগের এক ভাগ পেঁয়াজ আমদানি হয় বেনাপোল দিয়ে।
সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার আমদানিকারক জারিফ ইন্টারন্যাশনাল বন্ধের পর এই প্রথম বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৭৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করলেন। পেঁয়াজ বেনাপোল বন্দর থেকে ছাড়পত্রের জন্য কাজ করেন রয়েল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি সিএন্ডএফ এজেন্ট। সিএন্ডএফ এজেন্টের স্বত্তাধিকারী রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়,আমদানিকারকের ৭৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ ভারতের পেট্রাপোল বন্দর থেকে বেনাপোলে পৌছেছে। ইতোমধ্যে পেঁয়াজের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র থেকে সার্টিফিকেট নেওয় হয়েছে। ভারত থেকে রাত সাড়ে৮টায় পেঁয়াজের চালান প্রবেশ করে বেনাপোল বন্দরে। তারপর কাস্টমস ও বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ছাড় করে রাতেই ঢাকায় পাঠানো হয়। তবে দুই ৪দিনের মধ্যে আরো পেয়াজের ঢুকবে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রনালয়ের খামারবাড়িতে ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) এর জন্য আবেদন করেছেন অনেকে। অনুমতি পেলে ব্যাংকে এলসি খুলবেন তারা এরপর আরও বাড়বে পেঁয়াজ আমদানি।এখন পেঁয়াজ আমদানি করতে কোনো বাধা নেই বলে জানান সংশ্লিস্ট সূত্র। পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে আমদানির অনুমতি (আইপি) প্রদানের ব্যবস্থা নিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সর্বশেষ সোমবার পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি প্রদান করে কৃষি মন্ত্রনালয়। চাষিদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে চলতি বছরের ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানি নিষিদ্ধ করে সরকার। সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছিল চাষীসহ ব্যবসায়ীরা। কিন্থু এক শ্রেণী ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা লোভে নানা অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করতে থাকে। হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধির কারনে বিপাকে পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষগুলো।
বাংলাদেশ ভারত চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান সামনে কোরবানি ঈদ। এই উৎসবে পেঁয়াজের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি হয়।
বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, প্রায় তিন মাস বেনাপোল দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকে।। কৃষি মন্ত্রনাল সোমবার থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছেন। ব্যবসায়ীরা যাতে বন্দর থেকে দ্রুত পেঁয়াজ খালাস নিতে পারেন সে ব্যবস্থা বন্দর কর্তৃপক্ষ করছেন বলে তিনি জানান।