বিশেষ প্রতিনিধি

ভারতের বনগাঁ মহাকুমার সুটিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে গরু পাচহারকে  কেন্দ্র করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে  রইস উদ্দিন নামে এক বিজিবি সিপাহীর মৃত্যু হয়েছে। রইস উদ্দীনের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) ভোরে বেনাপোলের ধান্যখোলা সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার(২২ জানুয়ারী) বিজিবি’র যশোর ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জামিল সাক্ষিরত প্রেসরিলিজ জারি করে এই তথ্য নিশইত করেছেন।তার আগে স্থানীয় সুত্র ঘটনার সত্যতা জানিয়েছেন।

সুত্র জানায়. ভারতের সুটিয়া ও বাংলাদেশের ধান্যখোলা সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভোরে চোরাকারবারিরা গরু আনছিল। বিষয়টি টের পেয়ে বিএসএফ চোরকারবারিদের ধাওয়া করলে তারা বাংলাদেশ সীমান্তে ঢুকে পড়ে। এ সময় বিজিবি সদস্য সিপাহী রইস উদ্দীন বিএসএফ সদস্যদের দেখে সামনে এগিয়ে যান। ঘটনার সময় রইস উদ্দীন সাদা পোশাকে ছিলেন।

রইস উদ্দীন বিএসএস সদস্যদের কাছে নিজেকে বিজিবি সদস্য পরিচয় দেন।  ঘটনার ব্যাপারে জানতে চান। পরিচয় পাওয়ার পরও বিএসএফ সদস্যরা রইস উদ্দীনকে গুলি করে আহত করে। এরপর বিএসএফ আহত বিজিবি সদস্যকে ভারত সীমান্তের ভেতরে নিয়ে যায়। এসময় ৮/১০ রাউন্ড গুলির শব্দ শুনেছেন স্থানীয়রা।

ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার দুপুর ২টার দিকে রইস উদ্দীনের মৃত্যু হয় বলে সূত্র জানিয়েছে।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক জনপ্রতিনিধিও স্থানীয়রা জানান, ভোররাতে অন্তত ৮/১০রাউন্ড গুলির শব্দ পাওয়া যায়। বিজিবি ক্যাম্পে পাচার হওয়া দুটো গরুকেও আটক রাখা হয়েছে। সীমান্তে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে বলে স্থানীয়দের দাবি।এরইমধ্যে ঘটনাস্থল জোলেপাড়া ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন বিজিবির দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিওয়ন কমান্ডার ও যশোর ব্যাটালিয়নের সিইও লে. কর্নেল জামিল। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনি ঘটনাস্থলে রয়েছেন। মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান।ঘটনার বিষয়ে যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সিইও লে. কর্নেল জামিল বলেন, ‘আপাতত কোনো তথ্য জানাতে পারছি না। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

এ ব্যাপারে বিজিবি-র যশোর ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জামিল সাক্ষিরত প্রেসরিলিজ জারি করে জানা, ২২ জানুয়ারি ২০২৪ আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে বিজিবি যশোর ব্যাটালিয়নের ধান্যখোলা  বিওপি’র জেলেপাড়া পোস্ট সংলগ্ন এলাকায়  ভারত থেকে আসা একদল গরু চোরাকারবারীদের সীমান্ত অতিক্রম করে আসতে দেখলে দায়িত্বরত বিজিবি টহল দল তাদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা দৌড়ে ভারতের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বিজিবি টহল দলের সদস্য সিপাহী মোহাম্মদ রইশুদ্দীন চোরাকারবারীদের পিছনে ধাওয়া করতে করতে ঘন কুয়াশার কারণে দলবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।  প্রাথমিকভাবে তাকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায় সে বিএসএফের গুলিতে আহত হয়ে ভারতের অভ্যন্তরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনার পরপরই এ বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করা হয় এবং জানা যায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় উক্ত সৈনিক মৃত্যুবরণ করেছে। এ বিষয়ে বিএসএফ কে বিষয়টির ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানোর পাশাপাশি কূটনৈতিকভাবে তীব্র প্রতিবাদ লিপি প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও মৃতদেহ বাংলাদেশে দ্রুত ফেরত আনার বিষয়ে সব পর্যায়ে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।