ঢাকা থেকে চিত্র সাংবাদিক সোহরাব আলম
বাংলাদেশে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রবল ঝড়বৃষ্টি সহ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ঘূর্ণীঝড়টি উপকূল অতিক্রম করে মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে। উপকূলের ১৫টি জেলার নদ–নদীর জলস্তর বেড়েছে। উপকূলবর্তী এলাকার বহু বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া দপ্তরের কথায়, ঘূর্ণিঝড় অতিক্রম করার সময় উপকূলবর্তী এলাকায় ঝড়ের বেগ ছিল ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালি, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালি, ফেনী ও বরিশালে ক্ষতির আশঙ্কা সব চেয়ে বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। রাজধানী ঢাকাতেও ভারী বৃষ্টির জেরে রাস্তায় জল জমে গেছে।সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত হয় বাংলাদেশের একের পর এক জেলা। গোপালগঞ্জ, ভোলা, ঢাকা, বগুরা, নরাইলের মতো বহু জেলায় একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। এখনওপর্যন্ত দেশজুড়ে ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। তার মধ্যে তিন সদস্য একই পরিবারের। বেশীর ভাগই মৃত্যু হয়েছে গাছ চাপা পড়ে ও জলে ডুবে। এর মধ্যে কুমিল্লায় মারা গেছে ৩ জন, ভোলায় ২ জন, নড়াইলে ১ জন, বরগুনায় ১ জন এবং সিরাজগঞ্জে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। গোপালগঞ্জে গাছ চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন ২ মহিলা।সিত্রাংয়ের প্রভাবে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের দড়িকান্দি এলাকায় ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে বড় গাছ উপড়ে পড়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মঙ্গবার দুপুর পর্যন্ত ঢাকার বেশ কিছু অংশ, কুমিল্লা, ফেনি, নোয়াখালি, চাঁদপুরের শহুরে এলাকায় বিদ্যুতের দেখা নেই। অধিকাংশ জায়গায় বিদ্যুত্ নেই টানা ১৮ ঘণ্টা। কমপক্ষে ৮০-৯০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া ঝড়ে অধিকাংশ জায়গায় বিদ্যুত্, ইন্টারনেট বিকল হয়ে যায় । বিশেষ করে উপকুলবর্তী এলকাগুলির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ।প্রবল বৃষ্টিতে ঢাকার বহু জায়গায় বুক সমান জল জমে গিয়েছে। রাজধানী ঢাকায় বৃষ্টির পরিমাণ ২৫৫ মিলিমিটার।গাড়ি চলেনা। রাস্তায় বের হওয়ার জন্য মানুষের ভরসা একমাত্র রিক্সা। মীরপুর, শ্যামলী-সহ বহু জায়গায় ড্রেনের জল উপচে বাড়িতে ঢুকে গিয়েছে। সেই জল বের করতে হিমশিম খাচ্ছেন মানুষজন। কোনও কোনও জায়গায় ফুটপাতও চলে গিয়েছে জলের তলায়। বরিশালে বৃষ্টি হয়েছে ৩২৪ মিলিমিটার। উদ্ধার ও ত্রাণ হাত লাগিয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।সিত্রাংয়ের দাপটে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, বরিশাল, কক্সবাজার বিমানবন্দর প্রায় ২১ ঘণ্টা অচল থাকার পর মঙ্গলবার সকালের পর থেকেই খুলতে শুরু করেছে। দেশ, বিদেশ মিলে বাতিল হয়েছে মোট ১৩টি ফ্লাইট।