অনলাইন ডেক্স

বাংলাদেশে শারদীয় দুর্গোৎসব ও পরবর্তী সময়ে সাম্প্রদায়িক হামলায় যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের বাড়িঘর নির্মাণে সবরকম সহযোগিতা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের একথা জানান।

বাংলাদেশে দুর্গাপূজার সময় টানা তিনদিন ধরে পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলার ঘটনার রেশ না কাটতেই গত রাতে রংপুর জেলার পীরগঞ্জে হিন্দু ধর্মালম্বীদের বাড়িঘরে আগুন দেবার ঘটনা ঘটেছে, জানিয়েছে পুলিশ।

বলা হয়েছে, হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক তরুণ ফেসবুকে একটি পোস্টে ‘ইসলাম বিদ্বেষী’ মন্তব্য করার কথিত অভিযোগে ১৮টির মতো ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। রবিবার রাত ১০ টার দিকে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

পরে দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সহকারী পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘ভালোবাসার প্রস্তাব’ নামে একটি ফেসবুক আইডির প্রোফাইল ফটোতে কাবা শরিফের ছবি ছিল। সেখানে ওই কমেন্ট করা হয়। তবে এটা ফেক আইডি হবে বলে আমরা ধারণা করছি। নামেই বোঝা যায়।

কিন্তু উত্তেজিত জনতা কিছু ঘরবাড়িতে হাসিনার আগুন দিয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সেখানে পুলিশ, বিজিবি ও র‍্যাবের সদস্য মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। ১৩ অক্টোবর দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন কুমিল্লা শহরে একটি পূজা মণ্ডপে কোরান পাওয়ার পর সেখানে পূজামণ্ডপে হামলা হয়।

এরপর টানা তিনদিন নোয়াখালি, ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। পীরগঞ্জের আগে সর্বশেষ শনিবার ফেনীতে সংঘর্ষ হয়েছে। তিনদিনে অন্তত ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তিনদিনে ৭০টি পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর, লুঠপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজ সাংবাদিকদের আরও বলেছেন, আমরা এ পর্যন্ত যতগুলি তথ্য উদ্ধার করেছি, সবগুলিতে দেখেছি, এগুলির পিছনে রয়েছে কয়েকজন ব্যক্তি। তারা এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করা, একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এই সমস্ত প্রচেষ্টা চালিয়েছে।

তিনি আরও জানান, রংপুরের স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় এর মধ্যেই সেখানে ৪৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কয়েকজনকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ চেষ্টা করছে।