নিজস্ব প্রতিবেদন
ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা পরিচালক তরুণ মজুমদার প্রয়াত হলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। তাঁর শোকের ছায়ায় নেমে আসে সকল চলচ্চিত্র প্রেমী মানুষ এবং ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে।
গত ১৫ দিন ধরে তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। দিন কয়েক আগেই তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছিল। তবে বিপদ কাটেনি, তা আগেই জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। রবিবার তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থা আরও সঙ্কটজনক হয়ে পড়ে। তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। সোমবার সকালে প্রয়াত হন তিনি। তার মৃত্যু বাংলা তথা ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের এক যুগের অবসান হলো।
২২ বছর ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। হৃদরোগের সমস্যাও ছিল তাঁর। শরীরে একাধিক সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে বিনোদন দুনিয়ায়। ‘যাত্রিক’ গোষ্ঠীর তরফে তরুণ মজুমদার পরিচালিত প্রথম ছবি ‘চাওয়া পাওয়া’। মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেন ও তুলসি চক্রবর্তী। ‘যাত্রিক’-এর উদ্যোগে এরপরই বানিয়েছিলেন ‘কাঁচের স্বর্গ’। জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিল ছবিটি। ১৯৬৩ সালের পর থেকে তরুণ মজুমদার স্বাধীনভাবে কাজ শুরুর কথা ভাবছিলেন। ‘পলাতক’-এর পরে ১৯৬৫ সালে ‘আলোর পিপাসা’ ও ‘একটুকু বাসা’ বানিয়েছিলেন তিনি। বালিকা বধূ (১৯৬৭), নিমন্ত্রণ(১৯৭১), কুহেলি (১৯৭১), শ্রীমান পৃথ্বীরাজ (১৯৭৩), ফুলেশ্বরী (১৯৭৪), সংসার সীমান্তে (১৯৭৫), গণদেবতা (১৯৭৮)-এর মতো একাধিক নান্দনিক ছবি তিনি দর্শকদের উপহার দিয়ে গেছেন। পরবর্তীকালে তাঁর পরিচালিত হিট সিনেমার তালিকায় যুক্ত হয় দাদার কীর্তি (১৯৮০), ভালোবাসা ভালোবাসা (১৯৮৫), পথভোলা (১৯৮৬), আপন আমার আপন (১৯৯০)। দীর্ঘ পথচলায় তাঁর প্রাপ্তির ঝুলি ছিল বিশাল ভরাট। তাঁর পরিচালিত একাধিক ছবি জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। ১৯৯০ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন তরুণ মজুমদার। ‘ভালোবাসার বাড়ি’ তরুণ মজুমদার পরিচালিত শেষ ছবি। যেটি ২০১৮ সালে মুক্তি পায়।
তরুণ মজুমদারের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । শোকবার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘ভিন্নধারার রুচিসম্মত সামাজিক চলচ্চিত্র নির্মাণে তরুণ মজুমদার উজ্জ্বল নিদর্শন রেখে গেছেন। তাঁর ছবিতে রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রয়োগ দর্শককে আবিষ্ট করে রাখে। তাঁর প্রয়াণ চলচ্চিত্র জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি তরুণ মজুমদারের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেনl