বুধবারের ঘোষণায় সে অর্থে কোনও চমক ছিল না। বিনোদন জগৎ থেকে যাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন, তাঁরা এক প্রকার ‘দিদির লোক’ বলেই পরিচিত। এ দিন হুগলিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লেখালেন টলিউডের একঝাঁক শিল্পী। রাজ চক্রবর্তী, সুদেষ্ণা রায়, জুন মাল্য, কাঞ্চন মল্লিক, মানালি দে, সায়নী ঘোষ এ বার প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে এলেন।
রাজনীতির ময়দানে শিল্পীদের পদার্পণ নতুন কিছু নয়। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে টলিউড নিয়ে যে ভাবে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি-র মধ্যে দড়ি টানাটানি চলছে, সেটি বরং নতুন ট্রেন্ড। তাপস পাল, দেবশ্রী রায়, শতাব্দী রায়, চিরঞ্জিতের মতো তারকারা রাজনীতিতে এসেছেন তাঁদের কেরিয়ারের শেষ লগ্নে। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে তৃণমূল বিনোদন জগতের কমবয়সি অভিনেতাদেরও ভোটের ময়দানে নামিয়েছে। প্রথমে দেব এসেছেন। তার পর মিমি চক্রবর্তী, নুসরত জাহানেরা। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন মানালি, সায়নী এবং রাজ। কিছু দিন আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন কৌশানী মুখোপাধ্যায়। হাত গুটিয়ে বসে নেই বিজেপিও। রুদ্রনীল ঘোষ, যশ দাশগুপ্ত, হিরণ যোগ দিয়েছেন গেরুয়া শিবিরে।
এটা কি পাল্লাভারীর রাজনীতি চলছে? প্রশ্ন রাখা হয়েছিল রাজের কাছে। ‘‘কেউ কারও পছন্দের রাজনৈতিক দলে যোগদান করতেই পারেন। কাউকে দিয়ে জোর করে কিছু করানো যায় না,’’ বক্তব্য তাঁর। রাজ বরাবরই বলে এসেছেন তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ভক্ত’। কিন্তু প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে আসতে তাঁর খানিক অনীহাই ছিল। কিন্তু দিদির ডাক উপেক্ষা করতে পারেননি। রাজের কথায়, ‘‘বাঙালি বরাবরই রাজনীতি সচেতন। আর আমি অনেক দিন ধরে দিদির সঙ্গে যুক্ত। এর আগে নির্বাচনে ক্যাম্পেনও করেছি। এ বার সরাসরি যুক্ত হলাম। তৃতীয় বারের জন্য যাতে দিদিকেই মুখ্যমন্ত্রীর আসনে দেখতে পাই, সেই লক্ষ্যে আমার এই পদক্ষেপ।’’ পরিচালক সুদেষ্ণা রায়, অভিনেত্রী জুন মাল্য ওয়েস্ট বেঙ্গল কমিশন ফর প্রোটেকশন অব চাইল্ড রাইটস-এর সদস্য। তাঁরাও এ বার প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে এলেন। তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে সুদেষ্ণার বক্তব্য, ‘‘বাংলা কোনও দিন ধর্মে-মানুষে বিভাজন করেনি। একটা সাম্প্রদায়িক শক্তি আমাদের সেই ঐতিহ্যটা বদলানোর চেষ্টা করছে। এর বিরুদ্ধে একজোট হয়েই লড়াই করতে হবে।’’