রাজনৈতিক প্রতিবেদক

শুধু দল ছেড়েই ক্ষান্ত হলেন না একদা কংগ্রেসের  প্রবীন নেতা গুলাম নবি আজাদ জম্মু-কাশ্মীরে কংগ্রেসে বড় ধরণের ভাঙ্গন  ধরালেন  গোলাম নবী আজাদ, তাঁর রাজ্যে একটি নতুন দলও গঠন করছেন তিনি।

সূত্রে জনাগেছে, অন্তত ৫১ জন কংগ্রেস নেতা দল ছেড়ে আজাদের সেই নতুন দলে যোগ দিতে চলেছেন। যদি তাই হয় তা হলে  গোলাম নবী আজাদের কংগ্রেস ছাড়ার পর এই নিয়ে মোট ৬৪ কংগ্রেস নেতা দল ছাড়লেন।

সদ্য দলত্যগী বলে যে ৫১ জনের নাম উঠছে, তাঁদের মধ্যে আছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী তারা চাঁদও। ইতোমধ্যে সোনিয়া গান্ধীর কাছে  সম্মিলিত পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন নেতারা।
তারা চাঁদ ছাড়াও দল ছাড়তে চান আবদুল মজিদ ওয়ানি, মনোহর লাল শর্মা, ঘারু রামের মতো প্রাক্তন মন্ত্রী এবং বিধায়ক বলবান সিং। ইস্তফা দেওয়ার ঘোষণা করে বলবান সিং বললেন, ‘গুলাম নবি আজাদের সমর্থনে আমরা কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে একটি সম্মিলিত পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছি।’
৭৩ বছরের আজাদ এককালে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রিত্ব সামলেছেন। এখন কংগ্রেস সম্পূর্ণ ‘ধ্বংস’ হয়ে গেছে, এই অভিযোগ করে সম্প্রতি পাঁচ দশকের সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন তিনি।আজাদ  দল ছাড়ার জন্য দায়ী করেছেন রাহুল গান্ধীর ব্যর্থতাকে। ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধীর সময়ে দলের অভিজ্ঞ নেতারা যে গুরুত্ব এবং দায়িত্ব পেতেন, রাহুলের সময় তা বন্ধ হয়ে যায়। সেখান থেকেই দলের পতনের শুরু বলে মনে করছেন আজাদ।

সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই আসলে বিষয়টি দলে জটিলতার সৃষ্টি হয়।  মধ্যে গান্ধীদের পছন্দের লোকই কংগ্রেস সভাপতি হবেন, রিমোট থাকবে রাহুল গান্ধীর হাত। জি-২৩ গোষ্ঠী এই একই কারণে বিক্ষুব্ধ থাকে। তারা সোনিয়া গান্ধিকে সভাপতি হিসবে মান্যতা দিতে রাজী, কিন্তু রাহুলকে নয়। যদি কোন কারণে সোনিয়া গান্ধী সভাপতি হতে যদি রাজী না হ’ন তা হলে জি-২০ গোষ্ঠীর মধ্য থেকে পরীক্ষিত নেতা মণী্য তিওয়ারী কিংবা পৃথ্বীরাজ চৌহানের মতো নেতাকে সভাপতি করা হোক, এমনটাই দাবী ছিল গোলাম নবী আজাদসহ জি ২৩ নেতাদের। মূলত:গান্ধি পরিবারে জি-২৩ গোষ্ঠীর কোন মূল্যায়ন না থাকার কারণেই এই বড় ধরণের জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে বলেই আজ কংগ্রেসের এই দসার মূল কারণ, বলেছেন মনিষ তিওয়ারী।

গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠ এক প্রবীণ নেতা বলেছেন, যদি গান্ধী পরিবারের পছন্দের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ‘জি-২৩’ গোষ্ঠীর মনীষ তিওয়ারি কিংবা পৃথ্বীরাজ চৌহানের মতো কেউ সভাপতি হিসেবে প্রার্থীও হন তাহলে তাদের পরাজয়ও অবধারিত।তারা তা জেনেও বিরোধীতা করছেন।

সোমবার রাহুল ঘনিষ্ঠ অপর একজন বলছিলেন, ‘গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা, পৃথ্বীরাজ চৌহান কিংবা শশী থারুর কবে থেকে সাধারণ কংগ্রেস কর্মীদের প্রতিনিধি হলেন? আপনারা তো কোনও না কোনও সময় ইন্দিরা গান্ধী বা রাজীব গান্ধী হাতে করে তুলে এনে রাজ্যসভার সাংসদ বা পরে মন্ত্রী করেছিলেন। তাহলে আজ আপনাদের গান্ধী পরিবারের আইকন রাহুল গান্ধী, রণদীপ সিং সূরজেওয়ালা বা কে সি বেণুগোপালকে নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? তা ছাড়া আপনার নিজেরাই জানেন রাহুল কখনও সভাপতি হতে চাননি। রাহুল ক্ষমতালোভী নেতা নন। যদি তাই হতো কংগ্রেস জমানায় অনেক বড় ক্ষমতার অদিকারী হতে পারতেন, এই কথাটি আপনার নিজেরা জেনেও গান্দি পরিবারে বিরোধীতা করছেন যা অপরিনামদর্শী।