বাসস, ঢাকা

একরকম নিবিঘ্নেই সম্পন্ন হলো বাংলাদেশের হিন্দুধর্মাম্বলিদের প্রধান উৎসব দুর্গাপূজা। গত বছর বাংলাদেশের দুর্গাপূজোকে কেন্দ্র কররে  একদল দুষ্কৃতকারীরর প্ররোচনায় দু:খজনক ঘটনা ঘটে গিয়েছিলো সেই ঘটনার পরে সনাতন ধর্মের সম্প্রদায় এবারের দুর্গাপূজা নিয়ে বেশ শঙ্কায় ছিল, কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের পাখির চোখের দৃষ্টি, কড়াবার্তা এবং সর্বোপরি প্রশাসনিক সহযোগিতায় এখন পর্যন্ত যে খবর পাওয়াগেছে তাতে তেমন কোন  ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধর্মীয় উন্মদনাকে কঠোরহাতে দমন করার ব্যাপারে বরাবর শূন্য সহনশিলতা নীতিতে অবিচল থেকে বলেছেন কেউ কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করতে পারবে না। মঙ্গলবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়েরর সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারো জোর দিয়ে এ কথা বলেছেন।এদিন  তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই কর্মসূচিতে যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে এমন কিছু বলা থেকে এবং যে কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে যায় এমন কোনো ঘটনাকে বড় করে  দেখানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন এ ব্যাপারে সরকারের গৃহীত শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগুলোর দিকে সকলকে নজর দিতে বলেছেন। কারণ, এটা কারো বিশ্বাস, ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস।’

তিনি দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে হিন্দু জনগণসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে আপনাদের সহযোগিতা চাইব এবং আশা করি আপনারা সহযোগিতা করবেন।

তিনি আরও বলেন, সরকার সর্বদা দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা বা ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকে সমুন্নত রাখার চেষ্টা করছে এবং তা বজায় রেখে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, কাউকে কারো ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করতে দেওয়া হবে না, ধর্ম হলো একজনের বিশ্বাস। ‘এটি কারো আল্লাহর প্রতি বা সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস; আমাদের সেই চেতনা নিয়েই চলতে হবে।’

তিনি বলেন, এই দৃষ্টিকোন থেকে ইসলাম একটি অত্যন্ত উদার ও মহৎ ধর্ম এবং ইসলামে অন্য সব ধর্মের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের নির্দেশ রয়েছে।

শেখ হাসিনা সুরা কাফিরুনের উল্লেখ করে বলেন, এতে বলা হয়েছে যে প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করবে এবং সকল ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। ‘এবং আমরা এটি আমাদের হৃদয় থেকে বিশ্বাস করি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে সরকার সর্বদা সতর্ক রয়েছে।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘যখনই কোনও দুর্ঘটনা ঘটে তখনই সর্বদা পদক্ষেপ নেওয়া হয়, কারণ, আমরা চাই যে এই দেশের সকল নাগরিক তাদের ধর্ম যাই হোক না কেন তারা নিজ নিজ ধর্মীয় অনুষ্ঠান সমভাবে পালন করবে।’

তিনি বলেন, দেশের মানুষ সকল ধর্মের প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব ঐক্যবদ্ধভাবে উদযাপন করে যা খুবই অনন্য।’এটা আমাদের বড় সাফল্য যে আমরা এই চেতনা সমুন্নত রাখছি,’ তিনি বলেন, অন্যদের অবমূল্যায়ন করার সুযোগ নেই।

পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়া উপলক্ষে হিন্দু ভক্তদের বধেশ্বর মন্দিরের দিকে যাওয়ার সময় নৌকাডুবিতে মৃত্যুর জন্য শেখ হাসিনা গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী সমাজের বিত্তশালীদেও কল্যাণ ট্রাস্টকে সহায়তা করার আহ্বান জানান।এ লক্ষ্যে তিনি হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং তাতে সিড মানি দান করেছেন উল্লেখ করে বলেন, হিন্দুম্প্রদায়ের অনেক ধনী ব্যক্তি রয়েছেন এবং তারা অনুদানের পাশাপাশি পূজা ও অন্যান্য উৎসবে প্রচুর ব্যয় করেন। ‘আপনারা যদি আপনাদের পূজা বা উৎসবের খরচের একটি অংশ কল্যাণ ট্রাস্টে দান করেন, তবে, তা অসহায় মানুষকে সহায়তা করতে পারে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।ধানমন্ত্রী বলেন, এই আহ্বান বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম অন্যান্য ধর্মের লোকদের জন্য প্রযোজ্য হবে।