প্রথমনেই দেড়কোটি টাকা মুল্যের ৩৬টি চেচিস আমদানি করা হল রুপিতে
এম এ রহিম, বাংলাদেশ থেকে
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ভারতে পেট্রাপোল বন্দর হয়ে ১ কোটি ২৩ লাখ ১৭ হাজার ৭৬০ রুপি মূল্যের মোটর যন্ত্রাংশ নিয়ে চারটি ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। পণ্যের আমদানিকারক নিতা কোম্পানী লিমিটেড এবং রফতানিকারক ভারতের টাটা মটরস।
ডলার সংকট যখন প্রকট বাংলাদেশে এসময়ে দুদেশের এই যুগন্তকারী সিদ্ধান্ত ভারত ও বাংলাদে বানিজ্য ক্ষেত্রে সৃষ্টি হলো মাইলফলক।
শুরু হলো রুপিতে আমদানি বানিজ্য। মঙ্গলবার সন্ধায় প্রায় দেড়কোটি টাকা মুল্যের ৩৬টি চেচিস আমদানি কর হলো রুপির বিনিময়ে। রুপিতে প্রথম রফতানি কারক ভারতের টাটা মটরস ইন্ড্রাষ্ট্রি লি:। আমদানিকারক যশোরের নিতা মটরস ইন্ড্রাষ্ট্রি লি:। এই ব্যবস্তায় মহা খুশি ব্যবসায়িরা। রুপিতে আমদানি-রফতানি চালু হওয়ায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হলো তার ভালো প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের বানিজ্য সেক্টরে জানালেন ব্যবসায়ি তথা আমদানি রফতানি কারক সমিতির সভাপতি মহাসিন মিলন ও স্টাফ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান।বেনাপোল বন্দর পরিচারক আব্দুল জলিল ও বাংলাদেশ ভারত চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, দেশে যখন ডলার সংকট চলছে এসময়ে দু’দেশের মধ্যে সু সম্পর্কের কারনে রুপি ও টাকাতে শুরু হলো আমদানি রফতানি। রুপিতে এলসি দিয়ে মঙ্গলবার বিকালে আমদানিকৃত ৩০হাজার৭শ ৩০কেজি ওজনের ৩৬টি চেচিসের চালান এসেছে বন্দরে। যার আমদানি মুল্য ১কোটি ২৩লাখ ১শ ৬০রুপি। রুপি ও টাকায় বানিন্য চালু হওয়ায় লাভবান হবে উভয়দেশ। কমবে ডলারের চাহিদা বাড়বে বানিজ্য লাভবান হবে ব্যাবসায়িরা। কমবে হয়রনি সাশ্রয় হবে অর্থ। চিন ভারতসহ সব দেশের সাথে ডলারের পরিবর্তে স্ব স্ব দেশের মুদ্রায় আমদানি রফতানি করলে অনরক সুবিধা হয় এবং এটাই চান বাংলাদেশের আমদানিকারকরা।
উল্লেখ্য , ডলারের ওপর নির্ভরতা কমাতে প্রতিবেশী দু’ দেশ যৌথভাবে রুপিতে বাণিজ্য শুরুর এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গত ১১ জুলাই মঙ্গলবার ঢাকার লা মেরিডিয়ান হোটেলে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ভারতীহাইকমিশন দুই দেশের বাণিজ্যে রুপি ব্যবহারের ঘোষণা দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ওই সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর আবদুর রউফ তালুকদার ভারতে বাংলাদেশ ভ্রমণকারীদের সুবিধার্থে আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে ‘টাকা-রুপি কার্ড’ চালুর সম্ভাবনার কথা জানান। এই কার্ড দিয়ে দেশে ও প্রতিবেশী ভারতে সব বিল পরিশোধ করা যাবে।এতে করে বাংলাদেশের আমদানিকারকদের স্বস্তি মেলবে। তারা প্রতিবেশী দেশ থেকে ইতোমধে্য পণ্য কিনতে রুপিতে এলসি খুলতে শুরু করেছেন। ফলে ডলারের ব্যবহার কিছুটা কমবে। ডলারের ঘাটতির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে যাওয়া রোধ করতে সরকার আমদানি বিধি কঠোর করেছে। গত বছরের তুলনায় রিজার্ভ কমেছে প্রায় ২৩ শতাংশ। দু’দেশের মধ্যে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের একটি অংশের মূল্য পরিশোধের সুবিধার্থে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে ভারতে অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতি দিয়েছে। রপ্তানি ও রেমিট্যান্স থেকে আসা অর্থের তুলনায় আমদানি মূল্যের পরিমাণ বেশি হওয়ায় দেশের রিজার্ভ কমে যাচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তারা।