এ্ম এ রহিম, বাংলাদেশ থেকে

অবৈধ প্রবেশের পর পুলিশের হাতে আটক হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে জেল খাটার পর ভারত থেকে দেশে ফিরল ৪০ বাংলাদেশি তরুণ-তরুনী। এদের মধ্যে  ২০জন নারী ও ২০জন পুরুষ। বিভিন্ন সময়ে ভাল কাজের প্রলোভনে দালালদের মাধ্যমে ভারতে পাচার হয় তারা, পরে দালালরা তাদের রেখে পালিয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার বিকালে আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভারতের পেট্রাপোল বিএসএফ ও ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদেরকে যৌথভাবে বেনাপোল চেকপোস্ট বিজিবি ও ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়।

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে রয়েছে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। এ্রর ধারাবাহিকতায় দু দেশের স্বরাষ্ট্র ও্ পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের হস্তক্ষেপে  বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে দেশে ফেরে তারা্। ফেরত আসা বাংলাদেশিরা যশোর, খুলনা, ঢাকা, কুমিল্লা ও ফরিদপুর সহ বিভিন্ন জেলার অধিবাসী। বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্র্রেশন ও্সি আহসান হাবিব জানান, বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতে যেয়ে পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ, কলকাতা ও হাওড়ায়  আটক হয় এসব বাংলাদেশী নাগরিকেরা। পরে তাদেরকে পাঠানো হয়  স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিচালিত নিলুয়া কিশোরালয়, ধ্রুবসহ বিভিন্ন শেল্টার হোমে। সেখান থকে কেউ কেউ  ২থেকে ১০বছর জেল খাটার পর স্বদেশে ফেরে তারা্। ইমেগ্রেশনে  কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদেরকে  বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।রাইট যশোর মহিলা আইনজীবি সমিতি ও জাস্টিস এন্ড কেয়ার মানবধিকার সংগঠনের মাধ্যেমে তাদেরকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান পোর্ট থানার ওসি কামাল হোসেন  ভুইয়।দেশে ফেরত আসা রিতু পান্ডে ,নুর নাহার,তরিকুল ইসলাম ও রিয়াজ হোসেন বলেন,সীমান্ত পেরিয়ে চোরাই  পথে আত্মীয়ের বাড়ীতে বেড়াতে যায় তারা। পরে পুলিশের হাতে আটক হয়। দেশে ফিরতে পেরে ভাল লাগছে তাদের। আর চোরাই পথে ভারতে যেতে চাননা তারা।ফেরত আসা নুর নাহার লাইলা সুন্দরী ও জুলেখা খাতুন বলেন, ‘আমরা দালালদের মাধ্যমে বিভিন্ন সীমান্ত পথে ভালো কাজের আশায় ভারতে  আসি। এরপর বাসাবাড়িতে কাজ করার সময় ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হয়ে আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগ করেছি। এরপর সেখানে বিভিন্ন শেল্টার হোম আমাদের আশ্রয় দেয়। পরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শেল্টারহোম থেকে আজ দেশে ফিরেছি। শেল্টারহোমে আমাদের বয়সী অনেক বাংলাদেশি নারী ও শিশু আছেন। তারা সবাই দেশে ফেরার জন্য ব্যকুল হয়ে অপেক্ষা করছে।’

কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনার শেখ মারেফাত তারিকুল ইসলাম (দ্বিতীয় সচিব রাজনৈতিক) বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ প্রচেষ্টায় আজ এ সমস্ত নারী ও শিশুদের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। ফেরত আসাদের মধ্যে ২০ নারী ও ২০ শিশু রয়েছে।

মহিলা আইনজীবি সমিতির প্রগ্রাম অফিসার রেখা বিশ্বাস ও জাস্টিসে এন্ড কেয়ার-র সিনিয়র অফিসার মোহিত কুমার নাথ বলেন ফেরত আসা বাংলাদেশী তরুণ তরুণীদেরকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তুলে দেওয়া হবে পরিবারের কাছে। ফেরত আসা কিশোর কিশোরীদের বয়স ৮থেকে ১৭ বছের বলে জানান তারা।