“ক্ষেত্র কুঠি মেসবাড়ি!” না কলকাতা শহরে এই নামে কোনও বড় হোর্ডিং নেই। রাজপথে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক চাইলেও পাবেন না। পেরোতে হবে মুক্তারাম বাবু স্ট্রিট। তারপর জরাজীর্ণ এক বাড়িতে এসে ধাক্বা খেলেই বুঝবেন গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছেন। তবে উত্তর কলকাতায় “শিবরামের মেস” বলে হাঁক পাড়লে নবীন ময়রার ওপাশের লোকও আপনাকে ১৩৪, মুক্তারাম বাবু স্ট্রিট যাওয়ার পথ বাতলে দিতে পারেন।
মুক্তারামে বসে তক্তারামে শুয়ে শুক্তারাম খেয়ে শিবরাম আজ আর সেখানে বসে নেই। সে বাড়িতে মেস আছে বটে, তবে আতস কাচ দিয়ে খুঁজলেও সেখানে শিবরামকে খুঁজে পাওয়া দায়। কিন্তু এক কালে এই বাড়ির দোতলার ঘরে বসেই একের একের পর এক অফুরান হাস্যরসাত্মক গল্প সৃষ্টি করে গিয়েছেন হাস্যরসের অন্যতম জাদুকর শিবরাম চক্রবর্তী। তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য বাংলা পাঠকরা ঋণী। তবে শিবরাম অবশ্য ঋণী, রিনির কাছে। হবেন না! জীবনের প্রথম চুমু থেকে প্রথম দাদার প্রাপ্য সম্মান সবই দিয়েছে তো সেই মেয়েটাই।
এই গল্প হলেও সত্যি ঘটনার প্লট উত্তরবঙ্গে, রিনির সঙ্গে শিবরামের ছিল মনে মনে প্রেম। সকালে উঠেই মা হাতে দিলেন দুটো বড়ো বড়ো তালশাঁস সন্দেশ। রিনির সঙ্গে ভাগ না করে খাওয়া যায় না। কাজেই হাতে নিয়ে দে ছুট রিনির বাড়ি। দেখেই দুটো সন্দেশ একসঙ্গে রিনির মুখের ভিতর। ভারি বিপত্তি, শিবরাম তো চেখেও দেখেননি। বলতেই, পাখি যেমন ছানাকে খাওয়ায় সেভাবেই সন্দেশ শিবরামকে খাইয়ে দিয়েছিল রিনি। সেটাই মিষ্টিমাখা প্রথম চুমু। তারপর বোনফোঁটাও মিলেছে রিনির থেকে। রিনির মা বললেন, “তোর রামদাকে ফোঁটা দে এবার।” ফোঁটা দিল, প্রণামও করল, কিন্তু আদর আর করল না।
Source- Zeenews