নিজস্ব প্রতিবেদন
হঠাৎ জল আর জল প্লাবিত রাজ্যের বেশীর ভাগ এলাকা। প্রতি মূহুর্তে প্লাবিত এলাকার সংখ্যা বেড়ে আরও ভয়াবহ অবনতি হচ্ছে রাজ্যের দক্ষিণবঙ্গের আট জেলার বণ্যাপরিস্থিতি। গত দুদিনে জলে ডুবে, সাপের কামড়ে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাত পর্যন্ত ২৩ লক্ষ মানু্য বন্যার কবলে।
রাজ্যজুড়ে দেড় হাজার ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন দুই লক্ষাধিক মানুষ। চার লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সড়িয়ে নায়া হয়েছে। এখনও অনেক মানুষ বানভাসি হয়ে আছে।রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষঞ দ্বিবেদী জানান, ‘আরও নতুন নতুন এলাকা জলমগ্ন হবে, উপদ্রুত এলাকাগুলোতে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে আট কলাম সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকেই দক্ষিণবঙ্গের দামোদরসহ বিভিন্ন নদী টপকে জল ঢুকতে শুরু করে এবং তা বেড়ে হাওড়ার উদয়নারায়নপুর, হুগলির আরামবাগ, বর্ধমনের বিস্তীর্ন এলাক প্লাবিত হয়। বর্তমানে ওই সব এলাকায় আ্রও বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে প্রশাসন। নদীর পর নদী উপচে গআমের পর গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। এই মাত্র চোখে দেখা সমুহুর্তের মধ্যে মাঠের পর মাঠের ফসল নষ্ট হচ্ছে। বণ্যার এই ভয়াবহতায় রাজ্য প্রশাসন চিন্তিত হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এই বণ্যাকে ‘ম্যান মেড ফ্লাড’-র কথা বলে তাঁর অভিযোগ, না জানিয়ে ডিবিসি ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার ফলেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বানভাসি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে দক্ষিণবঙ্গের পাঁচ জেলা- হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম এবং বাঁকুড়ায়। টানা বৃষ্টিতে ডিভিসি জলাধারে জলের পরিমাণও অনেকটাই বেড়েছে। বেশকিছু এলাকায় বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে পড়েছে। বিঘার পর বিঘা জমি জলের তলায়। অন্যদিকে, দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি মহকুমা এলাকায়।
দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডিভিসি কে দায়ী ‘ম্যান মেড বন্যা’-র কথা বলেছেন। এবার মুখ্যমন্ত্রীর এই তত্ত্বকে খারিজ করে তার পাল্টা বক্তবা দিলেন আসানসোলের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। শনিবার সকালে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে এসে অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, ‘এটা হলো পিসি ও দিদিমনি মেড। ডিভিসির যে কমিটি জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিও রয়েছে, তাই রাজ্য সরকারের জল ছাড়ার বিষয়টি না জানার প্রশ্নই ওঠে না।’
রাস্তার যা অবস্থা, বাঁধেরও তাই। অতিবর্ষণে দুর্বল বাঁধ ভেঙে গিয়েই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এই ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি। এদিন তমলুকে এমনটাই দাবি করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ম্যান মেড বন্যার তত্ত্বের কটাক্ষ করতে গিয়ে তিনি বলেন, নিজের চেয়ার বাঁচাতে গিয়েই এই পরিস্থিতি।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এদিন পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে বলেন, এই বন্যার জন্য দায়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। তার অভিযোগ, গত কয়েক দশক ধরে বর্ষার আগে ফেব্রুয়ারি-মার্চে যে কাজ হয়, তা তিনি এবার করেননি, বলা ভাল করতে দেননি। কেননা এই মুখ্যমন্ত্রী ভবানীপুরের উপনির্বাচন নিয়েও ব্যস্ত ছিলেন।