এম এ রহিম, বেনাপোল প্রতিনিধি

বেনাপোল সিমান্ত (বাংলাদেশ): টানা দুই মাসপর ফের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। ফলে বেনাপোলসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সবজির বাজারে প্রতিকেজিতে ১১টাকা কমেছে পেয়াজের দাম।  ভারতীয় পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩১টাকায়।

আমদানিকৃত ভারতের পেঁয়াজের মূল্য পড়ছে প্রতি কেজি ৩৪ টাকা। সে অনুযায়ি বাজারে এই পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩৬ টাকা বিক্রি হওয়ার কথা, কিন্তু ইদের আগে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্নভাবে পেঁয়াজের মওজুদ করে রাখেন পরে তারা বেশী দামে বিক্রি করার জন্য। কিন্তু আচমকা ভারত থেকে পেয়াজ আমদানি শুরু হলে ওই সমস্ত পেঁয়াজ মওজুদদারীরা রাখী পেয়াজের বস্তা নিয়ে বিপাকে পড়ে। এর বিপরীতে তারা ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানিতে উৎসাহী যাতে না হয় সেই জন্য তারা তাদের মোজুদ পেঁয়াজ বাজারে দেদার ছেড়ে ভারতের আমদানি করা পেঁয়াজের মূল্যের চেয়ে্ো ৫ টাকা কম মূল্যে সেই পেঁয়াজ বিক্রি করছে। কারণ তাদের কৌশল হলো বাজারে তাদের ছাড়ানো পেঁয়াজের দাম কম হলে আমদানি করা পেঁয়াজ বেশী     দামে কেউ কিনবেনা। এর ফলে ভবিষ্যতে ভারত থেকে ব্যাবসায়ীরা পেঁয়াজ আমদানি করতে উৎসাহী হবেনা। কেননা ইদের বাজারে কেজি প্রতি ৫ টাকা কমে কিনতে পেরে ক্রাতারা খুশী ।  কিন্তু আমদানি যদি ঠিক  স্বাভাবিকভাবে চলতে থাকে তা হলে ওই সব অসাধু ব্যবসায়ীরা আমদানির রেসের আধিক্যে পেঁয়াজের মওজুদ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হবে। এমনটাই জানিয়েছেন পেঁয়াজ আমদানির সাথে জড়িত ব্যবসায়ীরা।

গত দুই দিনে ভারত থেকে প্রায় ১১৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।  আমদানির খবরে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজে দামও আগের চেয়া   কেজি প্রতি ৫/৭ টাকা কমেছে। দেশে বন্যা পরিস্থিতিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় পেয়াজের সংকটের আশঙ্কা এবং ঈদে যাতে পেঁয়াজের দাম না বাড়ে সে জন্য  ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার।বেনাপোলের ক্রেতা  মনির হোসেন ও জগদিস সরকার বলেন, বুধবার দেশি পেঁয়াজের কেজি৪২/৪৮  টাকা কিনেছি। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ায় কেজিতে ৯/১১ টাকা কমেছে। দাম কিছুটা কম হওয়ায় স্বস্তিতে নিন্ম আয়ের মানুষেরা।

খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা রাজু আহম্মেদ বলেন, দেশি পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। আমদানি স্বাভাবিক হলে দাম আরও কমে যাবে। তবে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানিতে দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে।

বেনাপোলের পেঁয়াজ আমদানিকারক  মিন্নু হোসেন মিন্টু রহমান এবং শামিম উদ্দীন গাজি বলেন, ইমপোর্ট পারমিট দেওয়ায় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। গত দুই দিনে ভারত থেকে ১১৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। আমদানি ও সরবরাহ বাড়লে আরও দাম কমবে।

বেনাপোল উদ্ভিদ  উপ-সহকারী কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার বলেন, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ৩৫-৩৬ লাখ টন। কিন্তু দেশে উৎপাদন হয় ৩০ থেকে ৩২ লাখ টন। গত বছর দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন বেড়েছে দুই লাখ ৭৯ হাজার টন। তবে গরম আর সংরক্ষণের অভাবে উৎপাদিত পেঁয়াজের ২০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়। তাই চাহিদা মেটাতে প্রায় পুরো বছর আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়। আর এসব পেঁয়াজের সিংহভাগ আসে ভারত থেকে। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে পাঁচ লাখ টনের অধিক পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছিল।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল বলেন, দুই মাস পরে আবারও পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। মঙ্গল ও বুধবার এই দুই দিনে ভারত থেকে ১১৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।  যাতে  বন্দর থেকে পেঁয়াজের চালান দ্রুত খালাস নিতে পারে  সে জন্য ২৪ ঘণ্টা বন্দর খোলা থাকছে।