প্রণব ভট্রাচার্য্য

বুধবার ছিল শারদীয় মহাঅষ্টমী। কুমারী পূজা, অঞ্জলী নিবেদন ও নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মহাঅষ্টমীপূজা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য জুরে পালিত হয়েছে। সাবেকিয়ানা পূজার বাইরে্ প্রতি বছরই থিমের আদলে পূজা প্যান্ডেল ও দূর্গা ঠাকুরের মূর্তি তৈরী করা হয়।

এবারের পূজা্য় মালদহের  পিপলা গ্রামের রামকৃষ্ণ ফ্যান ক্লাবের  একটি মন্ডপে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদলে রূপ দেওয়া হয়েছে দুর্গা মূর্তিতে। মণ্ডপ সজ্জাতেও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রচার, ‘বিশ্ব বাংলা’ প্রকল্প থেকে ‘খেলা হবে’ স্লোগান, বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের ছোঁয়া  রয়েছে পুজোয়। তৃণমূল কর্মী সমর্থক পরিচালিত এই ক্লাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদলে দুর্গা মূর্তি এবং প্যান্ডেল দেখতে সপ্তমীর সন্ধ্যা থেকেই  প্রচুর লোকের ভিড় জমতে দেখা যায়।

এই পুজো করছে রামকৃষ্ণ ফ্যান ক্লাব।  মাঠের মাঝখানে ফুটবলাকৃতির মণ্ডপে দশভূজা মমতাকে কেন্দ্র করে সাজানো রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন রূপের আরও কয়েকটা মূর্তি। এমনকি রয়েছে হুইল চেয়ারে ভাঙা পায়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি মূর্তিও। মণ্ডপ জুড়ে সাজানো হয়েছে ‘ত্রিপুরায় খেলা হবে’ বলে বিভিন্ন ছবি। মমতার দশ হাতে সাজানো রয়েছে বিভিন্ন জনমুথী প্রকল্প।

এদিকে এই মূর্তি ও প্যান্ডেল নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, এভাবে দেবীকে অপমান করা হচ্ছে। সনাতনী ধর্মের পরিপন্থী। মুখ্যমন্ত্রীর আদলে কেন দুর্গা মূর্তি গড়া হয়েছে এ নিয়ে প্রতিবাদ করেছে তারা। যদিও তৃণমূল এসবে মাথা ঘামাতে নারাজ। তারা বলছে, এই প্যান্ডেল ও প্রতিমা দেখতে মানুষের ভিড় বুঝিয়ে দিচ্ছে বিজেপি-র কথাকে মানুষ  গুরুত্ব দিচ্ছে না।

উল্লেখ্য, শুধু মালদহ নয়, কলকাতাতেও মমতার মুখের আদলে গড়া হয়েছে দূর্গা মূর্তি। বাগুইআটির একটি পুজো কমিটির দুর্গা প্রতিমা নিয়ে ইতিমাধ্যমে নেটমাধ্যমে সমালোচনা শুরু করেছে বিজেপি। প্রথমে স্থানীয় স্তরে চাপা অসন্তোষ শুরু হয়েছিল, বৃহস্পতিবার রাতে সেটা দিল্লি পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছে। মমতার মুখের আদলে দুর্গা প্রতিমা তৈরির সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করেছেন বিজেপি আইটি সেল প্রধান তথা একুশের ভোটে  পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির অন্যতম পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য। বঙ্গ বিজেপির পক্ষ থেকে এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন স্বয়ং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তাদের বক্তব্য, এটি দেবী দুর্গার অপমান। এটা বন্ধ করতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মমতা বাংলার হিন্দুদের অনুভূতিতে আঘাত করছে।  কিন্তু ওই দুই প্যান্ডেলেই প্রতিদিন মানুষের উপচেপড়া ভিড় সমস্ত ওই সমস্ত বিতর্ককে দূরে সরিয়ে দেয়।